‘জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিল ব্যবহার নীতিমালা-২০১৯’-এর খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
নীতিমালার আওতায় প্রশিক্ষণার্থী, প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, শিল্প প্রতিষ্ঠান, শিল্প দক্ষতা পরিষদ, অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, চর ও হাওর অঞ্চলের জনগোষ্ঠী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, পথশিশু, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী, বস্তিবাসী, বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া, চাকরিপ্রার্থী, বেকার বিদেশগামী কর্মী এবং বিদেশ প্রত্যাবর্তন কর্মী এ তহবিলের সুবিধা পাবেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দক্ষ জনশক্তি একটি জাতির সামাজিক-অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য খুবই অপরিহার্য। এ কারণে দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ নীতিমালা প্রণয়ন করে। তিনি বলেন, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দক্ষতা উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, কার্যক্রম, গবেষণা সমীক্ষার ক্ষেত্রে আর্থিক অনুদান প্রদানে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পর নিষ্পত্তি করবে। জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিল প্রত্যাশী প্রতিষ্ঠানকে অনুদান প্রদানে অনুরোধ জানাবে।
অর্থ বিভাগ ইতোমধ্যে জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিল কোম্পানি গঠন করেছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অর্থ বরাদ্দে যোগ্য
প্রতিষ্ঠান বা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ প্রদানকারীদের নির্বাচন প্রক্রিয়া, অর্থ বরাদ্দ প্রাপ্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর যোগ্যতা নির্ধারণ, প্রশিক্ষণার্থীকে উপবৃত্তি প্রদানের মানদ-, দক্ষতা উন্নয়নসম্পর্কিত কার্যক্রম গবেষণা সমীক্ষা ও উদ্ভাবন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং তহবিলের জন্য আবেদন প্রক্রিয়াকরণ, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের বিষয়ে নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ নীতির মাধ্যমে তহবিলের অর্থ বরাদ্দ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও বেশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা হবে।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হার ৫৮ শতাংশ : এ বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৫৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর বর্তমান সরকারের পুরো সময়ে বাস্তবায়নের এ হার ৭৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চারটি মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৫৩টি; বাস্তবায়ন হয়েছে ৩১টি; ২২টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন। তিনি জানান, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে পাঁচটি নীতি বা কৌশল, দুটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুমোদিত হয়েছে। এ সময়ে সংসদে আইন পাস হয়েছে পাঁচটি। বর্তমান সরকারের সময় অর্থাৎ গত ২১ জানুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিসভার মোট ১৬টি বৈঠক হয়। সেখানে ১১৬টি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়। বৈঠকগুলোয় গ্রহণ করা ১৬১টি সিদ্ধান্তের মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ১২২টি। বাস্তবায়নের হার ৭৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। বাস্তবায়নাধীন সিদ্ধান্ত রয়েছে ৩৯টি।