বয়ান হুমায়ুনের
মাস্ক-পিপিই ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে মেডিটেক ইমেজিং লিমিটেডের পরিচালক হুমায়ুন কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বাধীন টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। টিমের অপর সদস্যরা হলেনÑ উপপরিচালক নুরুল হুদা, সহকারী পরিচালক সাইদুজ্জামান ও আতাউর রহমান। এর আগে গত বুধবার একই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মেসার্স জেএমআই হাসপাতাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমেটেডের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক এবং তমা কনস্ট্রাকশনের সমন্বয়কারী (মেডিক্যাল টিম) মতিউর রহমানকে। গত ১ জুলাই তাদের তলবি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। একই অভিযোগে ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইজ ও টেকনোক্র্যাট লিমিটেডের মালিক মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে তলব করা হয়েছিল। দুদকের সেই ডাকে সাড়া দেননি তিনি। বিদেশে অবস্থানরত মিঠু নিজেকে অসুস্থ জানিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে অবশ্য লিখিত বক্তব্য পাঠিয়েছেন। দুদকের পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর কাছে পাঠানো চিঠিতে তিনি বলেছেন, পরিবারসহ ২০১৫ সালে আমি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চলে আসি। গত পাঁচ বছরে গড়ে এক মাসও দেশে অবস্থান করিনি। কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান যোগাযোগ বন্ধ এবং অসুস্থতাজনিত কারণে আমি হাঁটাচলায়ও অপারগ। এ জন্য
আমার পক্ষে সশরীরে হাজির হয়ে জবাব দেওয়া সম্ভব নয়। তাই নিযুক্ত আইনজীবী সৈয়দ মুহাসিন মো. সালাউদ্দিন কাওসারের মাধ্যমে আমার বক্তব্য দিচ্ছি। পরবর্তী সময়ে কোনো আবশ্যকতা দেখা দিলে আমার আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ করছি।
চিঠিতে তিনি আরও লিখেনÑ আমার মালিকানাধীন লেক্সিকন মার্চেন্ডাইজ ও টেকনো ট্রেড লিমিটেড কোভিড-১৯ চিকিৎসায় নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কোনোদিনই আমদানি অথবা সরবরাহ করেনি। যদি কেউ দাবি করে থাকে তার বিপরীতে কার্যাদেশ, চুক্তি অথবা অন্যান্য প্রমাণ দাবি করছি। তাই প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের দাবি করে দোষীদের শাস্তি দাবি করছি। মূলত নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবানের উদ্দেশে এবং দেশের মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মিডিয়া ও সরকারি বিভিন্ন অফিস ‘মিঠু সিন্ডিকেট’ নামের একটি কাল্পনিক জুজু তৈরি করা হয়েছে। এতে কোভিডকালীন যারা নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ করে বেশি মুনাফা করেছে তারা বেঁচে যাচ্ছে। আর দেশের মানুষকে বোঝানো হচ্ছেÑ সব মিঠু সিন্ডিকেটের কাজ। এ যেন উদোর পি-ি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর প্রচেষ্টা। কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে কোনো কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে, যার বিস্তারিত তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে রয়েছে। দুদক সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে তথ্য উদ্ঘাটন করলে দেশবাসী প্রকৃত সত্য সম্পর্কে জানবে।