রেলপথ ধরে হাঁটছিলেন তিন যুবক। হুইসেল বাজিয়ে সামনে থেকে ছুটে আসছে দ্রুতগতির ট্রেন। হঠাৎ ওই যুবকদের চোখে পড়ল সামনে রেললাইন ভাঙা। গায়ের লাল টি-শার্ট খুলে সিগন্যাল দিলেন তারা। সেটি দেখে ব্রেক কষলেন চালক। আর তাতেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি। গত শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার-রানীনগর স্টেশনের মাঝখানে কেল্লাপাড়া রেলব্রিজ থেকে ১২০ ফুট দক্ষিণে ঘটনাটি ঘটে। পাথরবাহী ওই ট্রেনের চালক সুজাউদৌলা জানান, তিন যুবক লাল রঙের গেঞ্জি দিয়ে ট্রেন থামানোর সংকেত দিচ্ছিলেন। সেটি দেখে তিনি ট্রেনটির গতিরোধ করেন। পরে নিচে নেমে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন সামনে রেললাইন ভাঙা।
সাহসী ওই তিন যুবক হলেন উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের পাল্লাগ্রামের জবেদ প্রামাণিকের ছেলে সারোয়ার, নজরুল ইসলামের ছেলে রনি হোসেন ও আলমের ছেলে নাঈম হোসেন। তারা জানান, প্রতিদিনের মতো ওইদিন বিকালে রেললাইন ধরে হাঁটাহাঁটি করছিলেন। কেল্লাপাড়া রেলব্রিজের দিকে যাওয়ার সময় তারা রেললাইনটি ভাঙা দেখতে পান। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই সামনের দিক থেকে ছুটে আসে একটি ট্রেন। তবে তারা জানতেন, লাল কাপড় দেখালে ট্রেন থেমে যায়। তাই একজনের কাছে থাকা লাল টি-শার্ট উঁচিয়ে ট্রেনটিকে থামান। তাদের এই সাহসিকতা ও দূরদর্শিতায় দুর্ঘটনার কবল থেকে ট্রেনটি রক্ষা পায়।
সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশনের পরিবহন পরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, পার্বতীপুর-খুলনা রেলপথের সান্তাহার জংশন স্টেশনের অদূরে কেল্লাপাড়া রেলব্রিজ এলাকায় আট ইঞ্চি রেললাইন ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খবর পেয়ে ওই অংশটি মেরামতকাজ শুরু হয়। যে কারণে বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।
সান্তাহার রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন বলেন, রেললাইনের ওই অংশ অনেক পুরনো হওয়ায় ভেঙে গেছে। খবর পেয়ে পিডব্লিউআই বিভাগ ওই অংশের রেল পরিবর্তন করে দিয়েছে।