লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ৩৮তম স্প্যান বসানো হয়েছে। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে সেতুর ১ ও ২ নম্বর পিলারের ওপর ৩৮তম স্প্যান ‘১-এ’ বসানো হয়। এরমধ্য দিয়ে সেতুর ৫ হাজার ৭০০ মিটার অর্থাৎ পৌনে ৬ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে। পদ্মা সেতুর সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তারা জানান, উপজেলার কুমারভোগ কনসট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে শনিবার সকাল ৯টার দিকে স্প্যান নিয়ে ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই নির্ধারিত পিলারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এর পর ক্রেনটি নির্ধারিত পিলারের কাছে পৌঁছলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা স্প্যানটি বসানোর কার্যক্রম শুরু করেন। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে ৩৮তম স্প্যান বসানো সম্পন্ন হয়।
এদিকে ৩৮তম স্প্যান বসানোর পর আর বাকি থাকল ৩টি স্প্যান। ইতোমধ্যে জাজিরা প্রান্তে সব স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। গত ১২ নভেম্বর ৩৭তম স্প্যান বসানো হয়। আগামী ২৩ নভেম্বর ১০ ও ১১ নম্বর পিয়ারে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’, ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নম্বর পিয়ারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া সেতুর ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্লাবের মধ্যে ১ হাজার ৪১টির বেশি স্লাব বসানো হয়েছে। আর ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্লাবের মধ্যে এখন পর্যন্ত বসানো হয়েছে ১ হাজার ৫০০টির বেশি।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৮টি স্প্যান। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরইমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেওয়া হবে।