সংসারে অভাব, সেই অজুহাতে সদ্যোজাত শিশুকে খালপাড়ে ফেলে দেন বাবা-মা। পরে পথচারীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলেও অভিমান নিয়েই পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় সেই নবজাতক। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ওইদিনই নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা এলাকার লাল মিয়া ও রিক্তা বেগমের ঘরে জন্ম হয়েছিল তার।
পুলিশ জানায়, বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা খালপাড় এলাকায় এক নবজাতককে শুক্রবার দুপুরে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন সজীব নামের এক পথচারী। তিনি নবজাতককে উদ্ধার করে প্রথমে বন্দর থানায় নিয়ে যান। পরে ওসি ফখরুদ্দীন ভূঁইয়ার নির্দেশে পুলিশ শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য বন্দরের ছায়া নূর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে রেফার করেন। সন্ধ্যায় সেখানেই চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।
ফরাজিকান্দা এলাকার যুবক সজীব জানান, তিনি বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় খালপাড়ে নবজাতকের কান্না শুনতে পান। পরে কাপড়ে মোড়ানো শিশুকে উদ্ধার করে বন্দর থানায় নিয়ে যান। পুলিশ তাকে হাসপাতালে পাঠায়। বন্দর থানার ওসি ফখরুদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, নবজাতককে উদ্ধারের পর স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম কোনো অনৈতিক সম্পর্কের জের ধরে শিশুটির জন্ম হয়েছে। পরে ফরাজিকান্দায় অভিযান চালিয়ে তার বাবা-মাকে খুঁজে বের করে পুলিশ। এ ঘটনায় অবহেলাজনিত কারণে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় মামলা দেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
ফরাজিকান্দা এলাকার আমানউল্লাহ মিয়ার বাসায় ভাড়া থাকেন লাল মিয়া দম্পতি। নবজাতকের বাবা লাল মিয়া জানান, তিনি একটি আটার মিলে স্বল্প বেতনে কাজ করেন। তার স্ত্রী পোশাক শ্রমিক। অভাবের সংসারে সন্তানের ভরণপোষণ সম্ভব নয় ভেবে তারা নবজাতককে খালের পাড়ে ফেলে যান।