রাজধানীতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে ডাকা বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দিয়েছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার জুমা নামাজের পর মাদ্রাসার কয়েকশ শিক্ষার্থী বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে ভাস্কর্যবিরোধী স্লোগান দেয়। পুলিশ তাতে বাধা দিলে শিক্ষার্থীরা বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এর পরও মিছিল নিয়ে বের হলে শান্তিনগরে পুলিশি বাধায় তা প- হয়ে যায়। সেখান থেকে সাত-আট জনকে আটক করে রমনা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা যায়, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হকের অনুসারীরা ভাস্কর্যের পাশাপাশি ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেয়। তবে তারা কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। সেই সঙ্গে মিছিলে ছিল না কোনো ব্যানার কিংবা ফেস্টুন। শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি সংগঠন সম্প্রতি ফয়জুল করীম ও মামুনুল হককে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছে এবং তাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানের শিক্ষার্থীরা বায়তুল মোকাররমে এসেছিলেন বিক্ষোভ মিছিল করতে। কিন্তু পুলিশ তাদের বাধা দিয়েছে।
রমনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম জানান, জুমার নামাজের পর হঠাৎ ১০০ থেকে ১৫০ জনের মতো মুসল্লি ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে একটি মিছিল বের করে। তাদের থামিয়ে দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বিষয়ে কোনো জবাব না দিয়ে উল্টো পুলিশের ওপর চড়াও হয়। পরে তাদের
ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। ওই মিছিল থেকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য সাত-আটজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ সমাবেশ বা মিছিল বের করতে আমাদের কাছে চিঠি দিয়ে অনুমতি চেয়ে থাকে। কিন্তু আজকে (গতকাল) যারা মিছিল বের করেছে, তারা আগে থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। এমনকি দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের উপেক্ষা করে তারা মিছিল নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে। এভাবে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত মিছিল নিয়ে গেলে আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে, অনুমতি ছাড়া তারা এটা করতে পারেন না। কিন্তু তারা তখনো কোনো কথা না শুনে শান্তিনগরের কর্ণফুলী মার্কেটের সামনে পর্যন্ত চলে আসে। এতে যানবাহন চলাচল থেমে যায়। এ পরিস্থিতিতে তাদের মিছিল থামাতে পুলিশ বাধা দিলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মিছিলটির নেতৃত্বে পরিচিত কোনো নেতা বা কোনো দলের পরিচয় ছিল না। এমনকি পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার তাদের কাছে দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলেও তারা কোনো ধরনের সহযোগিতা করেনি।’