বিভিন্ন দেশের কোম্পানিগুলোর উদ্ভাবিত করোনা ভাইরাসের টিকা যত দ্রুতই অনুমোদন দেওয়া হোক না কেন, বিশ্বকে কয়েক দশক ধরে এই মহামারীর আফটারশকের সঙ্গে লড়াই করে যেতে হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার করোনা ভাইরাস নিয়ে সতর্কতা বিষয়ে জাতিসংঘের এক সম্মেলনে গুতেরেস এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে জাতিসংঘ মহাসচিব করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়ে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের বোকা বানাব না। একটি টিকা ক্ষতিগ্রস্ত এই পৃথিবীকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারবে না। আগামী কয়েক বছর, এমনকি কয়েক দশক ধরে এর জের চলবে। ইতোমধ্যে পৃথিবীতে চরম দরিদ্রের সংখ্যা বাড়ছে। ছড়িয়ে পড়েছে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা। আমরা ৮ দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি।’
মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত এই বিশ্বে টিকা নিরাময়ের কোনো উপায় নয় উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারীতে বিশ্বে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ মারা গেছে। যা বৈষম্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো দীর্ঘমেয়াদি অন্যান্য চ্যালেঞ্জকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এখন যে টিকা আসতে চলেছে, সেগুলো বিশ্বের সব মানুষের জন্য হতে হবে- যাতে বিশ্বের প্রতিটি মানুষ এর অংশীদার হয়।
গুতেরেস আরও বলেন, ‘মহামারীতে সৃষ্ট চরম সংকট উন্নত ও বড় অর্থনীতির দেশগুলো কোনোমতে সামলাতে পারলেও সমস্যায় পড়েছে নিম্ন ও মধ্যআয়ের দেশগুলো। জনগণকে মৌলিক সেবা দিতে না পারলেও তাদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে নেওয়া ঋণ মেটাতে হচ্ছে। এখন তারল্য সংকট এড়াতে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে সহায়াতা দরকার।’
এদিকে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) এক নতুন সমীক্ষায় বলেছে, করোনা ভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ২০.৭ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে যেতে পারে। এতে করে চরম দারিদ্র্যসীমায় থাকা মানুষে সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে শতকোটিও। তবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে দৃষ্টি দিয়ে বিনিয়োগের মাধ্যমে চরম দারিদ্র্যসীমায় যাওয়ার গতিকে টেনে ধরতে পারলে, করোনা মহামারীর আগে উন্নয়নের যে গতি ছিল, তাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।