মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মসজিদে ঢুকে দৈনিক আমাদের সময়ের গজারিয়া উপজেলা প্রতিনিধি আমিরুল ইসলাম নয়নের ওপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানের অনুসারীরা। গতকাল উপজেলার বালুয়াকান্দি গ্রামের উত্তরপাড়া জামে মসজিদে জুমার নামাজের সময় এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের বাধা দিতে গেলে নয়নের শ্যালক সাদ্দাম হোসেন ও শ্বশুর ওয়ারেন্ট অফিসার (অব) কামাল প্রধান আহত হন। ঘটনার পরপরই নয়নসহ তিনজনকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক নয়ন ও সাদ্দামকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। গজারিয়া
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কামরুন নাহার জানান, আমিরুল ইসলাম নয়নের ডান পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও মাথায় শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। অন্যদিকে তার শ্যালক ও শ্বশুরের গায়ে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আহত আমিরুল ইসলাম নয়ন ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান জুয়েলের অনুসারীদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি স্থানীয় একটি পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এর জের ধরে শহীদুজ্জামান জুয়েল ও তার অনুসারীরা ক্ষিপ্ত ছিলেন নয়নের ওপর। গতকাল জুমার নামাজ পড়তে গেলে মসজিদে ঢুকে তার ওপর হামলা চালান চেয়ারম্যানের দুই ভাই মন্টু ও সেন্টু, ভাগ্নে রুবেল ও বাবু এবং তাদের সহযোগী সুজন, মেহেদী, মাসুম, রাসেল, সুমন, সালাম, গাফফারসহ অন্তত ২৫ জন। তারা ধারালো অস্ত্র, রড ও ইট দিয়ে নয়নকে আঘাত করেন। শ্যালক ও শ্বশুর বাধা দিতে গেলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। পরে মুসল্লিরা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।
ঘটনার ব্যাপারে বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান জুয়েল বলেন, বালুয়াকান্দি উত্তর পাড়া জামে মসজিদের কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ওই মসজিদে আমার বোনের জামাই সামসুল হক সভাপতি ও সাংবাদিক নয়নের শ্বশুর কামাল প্রধান সাধারণ সম্পাদক দীর্ঘ ১২ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। সব মুসল্লির দাবি, তাদের দুইজনকেই গণতন্ত্র অনুযায়ী এ দায়িত্ব পালন করুক। কয়েকদফা এ নিয়ে বসা হয়েছিল। শুক্রবার জুমার নামাজের সময় একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে বলে ফোনের মাধ্যমে জানতে পারি। আমি সকালেই ঢাকা চলে আসি। তিনি আরও বলেন, আমিরুল ইসলাম নয়নের সঙ্গে আগে-পরে আমার কোনো বিরোধ ছিল না। শুধু কমিটি নিয়ে এলাকার মুসল্লিদের মধ্যে একটি পূর্ব বিরোধ ছিল।
এদিকে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মীর নাছির উদ্দিন উজ্জ্বল ও সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ খোকাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
মুন্সীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আশরাফুজ্জামান জানান, এ ঘটনার পর পরই জড়িতদের আটকে অভিযান শুরু করেছে গজারিয়া থানাপুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান এই কর্মকর্তা।