দায়িত্বগ্রহণের পর প্রথম ১০০ দিন দেশবাসীকে মাস্ক পরার জন্য বলবেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস- যদি প্রতিটি আমেরিকান মাস্ক পরেন, তা হলে করোনা ভাইরাস উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে।’ দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি প্রতিটি সরকারি ভবনে মাস্ক পরার নির্দেশ দেবেন বলেও জানান এই ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট।
৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে দরকারি ২৭০ ভোটের থেকে ৩৬ ভোট বেশি পেয়ে জয় নিশ্চিত করেছেন বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেন। কিন্তু রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্প প্রথম থেকেই বলে আসছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি।
ট্রাম্পের হেরে যাওয়ার কারণ হিসেবে করোনা মোকাবিলায় তার প্রশাসনের অবজ্ঞাকে দায়ী করা হচ্ছে। আর বাইডেন প্রথম থেকেই বিজ্ঞানীদের কথা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে এসেছেন।
সিএনএনকে বাইডেন বলেছেন, ‘অভিষেকের প্রথম দিনই আমি দেশবাসীকে বলব, শুধু ১০০ দিনের জন্য মাস্ক পরুন, শুধু ১০০ দিন, সারা জীবন নয়। আমি মনে করি, যদি আমরা তা করি তা হলে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যাবে। যদি তাই হয়, তবে টিকা এবং মাস্ক পরার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত কমানো যাবে।’
দায়িত্বগ্রহণের আগেই বাইডেন এমন কথা বলতে পারেন কিনা তা নিয়ে কথা বলেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এ ধরনের নির্দেশ দেওয়ার আইনি বৈধতা নেই।’ তবে বাইডেন সিএনএনকে বলেন, তিনি এবং তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রে মাস্ক পরার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে কেবল সরকারি সম্পত্তির ওপর প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা থাকে। তিনি কেবল এ ধরনের ক্ষমতা চর্চা করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। বাইডেন বলেন, ‘আমি একটি আদেশ কার্যকর করব তা হলো- সরকারি ভবনে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।’ গণপরিবহনসহ বিমানেও সবাইকে মাস্ক পরতে হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে পরিবহনগুলোয় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস তা প্রত্যাখ্যান করে। দেশটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউচি ট্রাম্পের তোপের মুখে পড়েন। যদিও ফাউচিকে বাইডেন তার প্রশাসনের কোভিড-১৯ দলের প্রধান চিকিৎসা উপদেষ্টা হিসেবে রাখবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু এখনো ঊর্ধ্বমুখী। এ পর্যন্ত দেশটিতে ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার মানুষের।