বাংলাদেশে বিট কয়েন প্রতারণাকারী চক্রের মূলহোতা মো. রায়হান হোসেন ওরফে রায়হানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১। জানিয়েছে, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করা রায়হান চড়তেন বিলাসবহুল অডি গাড়ি। তার ২৫০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, গত এক মাসে ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় ৩০ লাখ টাকা) লেনদেন হয়েছে এসব অ্যাকাউন্টে।
গত মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার সফিপুর দক্ষিণপাড়া আতর আলীর বাড়ি থেকে রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানকালে তার কাছ থেকে ১৯টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ২২টি সিমকার্ড, একটি কম্পিউটার, ৩টি মোবাইল ফোন, ৩টি ভুয়া চালান বই, একটি ট্রেড লাইসেন্স, একটি টিন সার্টিফিকেট, একটি করে রেকর্ডিং মাই?োফোন, ক্যামেরা, রাউটার, হেডফোন ও মডেম এবং বিভিন্ন ব্যাংকের ৪টি চেকবই জব্দ করা হয়েছে।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার বলেন, অনলাইনে নিষিদ্ধ বিট কয়েন (ভার্চুয়াল মুদ্রা) কেনাবেচা ও প্রতারণার মাস্টারমাইন্ড রায়হান। সম্প্রতি ১ কোটি ৭ লাখ টাকা মূল্যের ওডি গাড়ি কিনেছেন তিনি।
মাত্র এক মাসে তার অ্যাকাউন্টে ৩৫ হাজার ইউএস ডলার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩৫ লাখ টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। রায়হানের প্রতারণার শিকার হয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ। ২০০৬ সালে কম্পিউটারের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে রায়হান। এর পর ২০১১ সাল থেকে ওয়েব ডেভেলপিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি পরিচালনা করে আসছে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, ২০২০ সালের জুন থেকে পাকিস্তানের নাগরিক সাইদের সহায়তায় বিট কয়েনের মাধ্যমে প্রতারণা করে অবৈধ অর্থ হাতিয়ে আসছে রায়হান। অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে বিভিন্ন দেশের গ্রাহকের সঙ্গে অবৈধ বিট কয়েনের মাধ্যমে প্রতারণা শুরু করেন। তিনি পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও রাশিয়ার স্মাগলার, ?েডিট কার্ড-হ্যাকার ও বিট কয়েনের মাধ্যমে অবৈধ পাচারকারীদের সঙ্গে যোগশাজসে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। ?েডিট কার্ড হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিট কয়েন ?য় করে। স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করে নামে-বেনামে দেশি-বিদেশি অনলাইন ব্যাংক হিসাব তদারকি করে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার ইউএস ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন রায়হান।
র্যাব জানায়, প্রতারক রায়হান এমআরএইচ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট নামে একটি কোম্পানির পরিচয় দিয়ে দেশে বিটকয়েন মাধ্যমের একাধিক ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়। তার ২৫০টি বিট কয়েন অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। অষ্টম শ্রেণি পাস রায়হান নিজেই পরিচয়পত্র তৈরি করত। গত ৮ বছর ধরে সে অনলাইনে আউট সোসিং ব্যবসা করে আসছে। রায়হান বিট কয়েনের মাধ্যমে সাধারণ লোকজনের টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণাসহ মানিলন্ডারিং, ?েডিট কার্ড হ্যাকিং ও বিপুল অংকের বিট কয়েন লেনদেন করেছে। বাংলাদেশে অবৈধ বিট কয়েনের শেকড় গাড়তে দেওয়া হবে না বলেও জানান র্যাব কর্মকর্তা তোফায়েল।