দক্ষিণ কোরিয়াতে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন করা হয়েছে। সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাস ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যৌথ উদ্যোগে এ কোর্সের উদ্বোধন করা হয়।
এদিন ড. মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনলাইনে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দূতাবাসের ফাস্ট সেক্রেটারি (শ্রম) ও দূতালয় প্রধান মকিমা বেগমের উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। গত রোববার প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনের পরে বক্তব্য দেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রিজওয়ান রহমান। তিনি বলেন, ‘বিদেশে কর্মরত আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধারা বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নে অনেক অবদান রাখছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা ১৮.২ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্দেশ্য হল অনাবাসী প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া ও উদোক্তা হতে উদ্বুদ্ধ করা। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ব্যবসায়ের সূচনা, কোম্পানির নিবন্ধকরণ, কৌশলগত ব্যবসায়ের পরিচালনা, শিল্পের জন্য জায়গা নির্বাচন করা, কীভাবে লাইসেন্স পাওয়া যাবে, সাপ্লাই চেইন, অ্যাকাউন্টিং, ব্যবসায়ের সম্প্রসারণ এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যবসার প্রক্রিয়া পরিচালনা কীভাবে করা যায় এ ধরনের বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ বৈদেশিক কর্মসংস্হান ও পরিষেবাদি লিমিটেডের (বোয়েসেল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল হাসান বাদল। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে বাংলাদেশের দক্ষ শ্রমিকদের ভালো চাহিদা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী আমরা দক্ষ কর্মী পাঠাতে চাই। তিনি বিশ্বাঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ধরে রাখতে প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানান।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক এফ এম বোরহান উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘রেমিটেন্স আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে অষ্টম।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দঃ কোরিয়াস্হ সিউলের বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্টদূত আবিদা ইসলাম। সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ গঠনে প্রবাসীদের অবদান অপরিসীম। দক্ষতা এবং ট্রেনিং শ্রমিকদের আপগ্রেড করে এবং তাদের যুগোপযোগী করে তোলে। যা তাদের আরও উপার্জনের জন্য প্রতিযোগীতামূলক হয়ে উঠতে সহায়তা করে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে কোরিয়াতে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশী বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। উদোক্তা উন্নয়নের ওপর প্রশিক্ষণটি দেশে গিয়ে কীভাবে একটি ব্যবসা শুরু করতে পারবে সে বিষয়ে তাদের পরিচালিত করবে এবং প্রবাসীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসও অর্জন করবে।’
দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, ছোট কোর্স এবং বড় কোর্স দুইটি ধাপে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সংক্ষিপ্ত কোর্সের ক্লাস উদ্বোধনের দিন থেকে শুরু হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদের কোর্স আরম্ভ হবে আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে।
দীর্ঘ মেয়াদের প্রশিক্ষণ কোর্সে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। এই কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছে ইপিএস কর্মী, কোরিয়াতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য পেশার প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ইপিএস কর্মী ও আমাদের সময়ের দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিবেদক অসীম বড়ুয়া, পিএইচডি শিক্ষার্থী মো. রবিউল কবির, মুরসালিন শেখ, নাজমুল হোসাইন।
এ ধরণের উদ্যোক্তা কোর্সে চালু করে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তারা দূতাবাস ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্সকে ধন্যবাদ জানান।