অবৈধ মাদক ইয়াবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে হেফাজতে রাখার অভিযোগের মামলায় ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেছেন আদালত। আজ সোমবার মামলার বাদী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব-৩) ওয়ারেন্ট অফিসার গোলাম মোস্তফাসহ তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. রবিউল আলম সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।
এদিন সাক্ষ্য দেওয়া অপর দুই সাক্ষী হলেন, সার্জেন্ট জহিরুল ইসলাম ও ড্রাইভার হুমায়ুন কবির।
সাক্ষ্যগ্রহণকালে কারাগার থেকে খালেদকে আদালতে হাজির করা হয়। ওই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউর মোহাম্মাদ সালাউদ্দিন হাওলাদার জানান, বিচারক সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণের পর আসামি পক্ষে আইনজীবী ‘সিনিয়র আইনজীবী নেই’ উল্লেখ করে সময় আবেদন করে কিন্তু আদালত তা নাকচ করেছেন।
খালেদের ৫৮০ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৫০ টাকা উদ্ধারের মামলায় গত বছরের ১৭ নভেম্বর চার্জশিট দেয় র্যাব। এরপর গত বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।
চার্জশিটে বলা হয়, ১৯৯৬ সালে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ঢাকা মহানগর যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। ২০১২ সালে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়ে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন। ঢাকার মতিঝিলের ইয়ংমেন ক্লাব, আরামবাগ ক্লাবসহ ফকিরাপুলের অনেক ক্লাবে ক্যাসিনোর আসর বসিয়ে রমরমা মাদক ব্যবসাসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করেন। সে খিলগাঁও-শাজাহানপুর চলাচলকারী গণপরিবহন থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন। কোরবানি ঈদের সময় শাজাহানপুর কলোনি মাঠ, মেরাদিয়া, কমলাপুর, সবুজবাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করতেন। সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে রাজউক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রেল ভবন, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ফকিরাপুলসহ বেশির ভাগ এলাকার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন খালেদ মাহমুদ। তার দুটি অস্ত্রের লাইসেন্সে ৫০টি করে গুলি কেনার হিসাব থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তার হেফাজত থেকে শটগানের সাতটি ও পিস্তলের নয়টি অতিরিক্ত গুলি উদ্ধার করা হয়। এগুলো ২০১৭ সালের পর নবায়ন করা হয়নি। তাই সেগুলো অবৈধ অস্ত্র।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আটক করা হয় খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। ওই সময় তার বাসা থেকে একটি অবৈধ অস্ত্র, লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করা আরও দুইটি অস্ত্র, কয়েক রাউন্ড গুলি ও দুই প্যাকেটে ৫৮২ পিস ইয়াবা জব্দ করে র্যাব। এছাড়া তার বাসার ওয়াল শোকেস থেকে ১০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ও চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা সমমূল্যের মার্কিন ডলার জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় মদক, অস্ত্র ও মানিলন্ডরিং আইনে মামলা হয়। পরবর্তীতে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৮৫৯ টাকার অবৈধ সম্পদের অর্জনের অভিযোগে উ-পপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।