চীনের সোনার খনিতে দুর্ঘটনায় আটকে পড়া ২২ শ্রমিকের মধ্যে ১১ জনকে জীবন্ত উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে প্রথম এক শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়। তার এক ঘণ্টা পর খনির অন্য টানেলগুলো থেকে আরও ১০ শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১০ জানুয়ারি শানদং প্রদেশের হুশান সোনার খনিতে বিস্ফোরণ হয়। ফলে খনিতে কর্মরত ২২ জন শ্রমিক মাটির ২ হাজার ফুট (৬৬০ মিটার) গভীরে আটকা পড়েন। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ সকালে ১১ জনকে ঘটনার ১৪ দিন পর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম যাকে উদ্ধার করা হয় তার চোখ বাঁধা ছিল। অন্ধকার থেকে হঠাৎ আলোতে তার দৃষ্টি নিরাপদ রাখতে এমনটি করা হয়। উদ্ধারকৃত শ্রমিকের শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। তিনি যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। উদ্ধারের পরই প্রথম ব্যক্তিসহ বাকিদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
জানা যায়, হুশান সোনার খনিতে হঠাৎই বিস্ফোরণে ১০০ মিটার গভীরে আটকা পড়েন খনির ২২ শ্রমিক। বিস্ফোরণের কারণ এখনো জানা যায়নি।
যেভাবে মিলল তাদের সন্ধান
গত ১০ জানুয়ারি বিস্ফোরণে খনির প্রবেশমুখ ধ্বংস হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পরে সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এক সপ্তাহ কোনো যোগাযোগ বা সংকেত পাওয়া যাচ্ছিল না। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের ভেতর দিয়ে যেসব রশি নামিয়ে দিয়েছিলেন সেখানে গত ১৭ জানুয়ারি একটা টান অনুভব করেন। এরপর আটকে থাকা শ্রমিকরা রাশিতে বেঁধে এক টুকরো কাগজ উপরে পাঠাতে সক্ষম হন।
সেখান থেকেই জানা যায় যে ওই দলে ১১ জন শ্রমিক জীবিত আছেন এবং তাদের চেয়ে মাটির আরও একটু নিচে একজন রয়েছেন।
এতদিন যেভাবে বেঁচে ছিলেন শ্রমিকরা
মাটির ২০০০ ফুট নিচে গত ১৪ দিন ধরে এসব শ্রমিক নিচ্ছিদ্র অন্ধকারের মধ্যে আটকা পড়ে ছিলেন। এদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারার পর উদ্ধার-কর্মীরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের লাইন প্রতিষ্ঠা করেন। অপ্রশস্ত এক গর্ত দিয়ে তাদের জন্য ওষুধপত্র পাঠানো হয়। পাঠানো হয় পরিজ এবং অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার। সেগুলোর সদ্ব্যবহার করেই অন্ধকারে বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যান এসব শ্রমিক।