কক্সবাজার সদর হাসপাতালে অগ্নিকা-ে এক রোহিঙ্গা রোগীর মৃত্যু ও ৫০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বিকাল ৫টার পর হাসপাতালের নিচতলার স্টোর রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট। বর্তমানে বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের কার্যক্রম। বিশেষ ব্যবস্থায় হাসপাতালের বাইরে রোগীদের
চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে চার শতাধিক রোগীকে। মৃতের নাম নুরুল বাহার (৭৫)। তিনি টেকনাফ উপজেলার মুছনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অক্সিজেনের অভাবে চিকিৎসাধীন ওই রোহিঙ্গা রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে তার স্বজন নুরুল হামিদ দাবি করেছেন। এ ছাড়া ছোটাছুটিতে আহত হয়েছেন ৫০ জনের বেশি। আহতরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের স্বজন।
আগুনের সূত্রপাত কী কারণে, তা নিশ্চিত করতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী, রোগীর স্বজন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালের নিচতলার ১২১ নম্বর কক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ওই কক্ষে বিভিন্ন সরঞ্জাম মজুদ ছিল। খবর পেয়ে কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের দুটি ও রামু স্টেশনের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এ সময় হাসপাতালের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনরা ছোটাছুটি শুরু করেন। বেরিয়ে আসার পর কিছু রোগীকে স্বজনরা বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যান। তবে বেশিরভাগ রোগী হাসপাতালের আশপাশে অবস্থান করেন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার শাহীন ও আবদুর রহমান জানান, অগ্নিকা-ের কারণে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরি বিভাগ চালু রেখে হাসপাতালের বাইরে রোগীদের বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল চার শতাধিক রোগীকে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল করে সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার পর পুরোদমে হাসপাতালের চিকিৎসাব্যবস্থা চালু হবে বলেও জানান তিনি।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, অগ্নিকা-ের কারণ নির্ণয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হাসপাতালে অগ্নিকা-ের পর কক্সবাজার শহরে ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। এ সময় বিভিন্ন সড়কে যানবাহন আটকা পড়ে। প্রায় ৫ ঘণ্টা সড়কে তীব্র যানজট লেগে থাকে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান পিপিএম জানান, হাসপাতালে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত বাইরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরা।