ঢাকার আশুলিয়া থেকে ছয় বছরের এক শিশুকে অপহরণের পাঁচদিন পর চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৪৷ এ সময় দুই অপহরণকারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সোমবার দুপুরে র্যাব-৪-এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক। গ্রেপ্তার দুজন হলেন মো. জাকির হোসেন (২১) ও শান্ত মিয়া (২৯)।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪-এর অধিনায়ক মো. মোজাম্মেল হক জানান, ঢাকার আশুলিয়া মডেল থানার কাঠগড়া এলাকা থেকে ছয় বছরের শিশু মো. আলী হোসেনকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। অপহরণের পর শিশুটির পরিবারের কাছ থেকে ১৫ লাখ মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না দিলে শিশুকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় অপহরণকারীরা।
তিনি জানান, গত শুক্রবার অপহরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর র্যাব-৪-এর একটি দল অভিযানে নামে। অনুসন্ধানে জানা যায়, অপহৃত শিশুকে বাইপাইল ও সায়েদাবাদ হয়ে চট্রগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে গতকাল রোববার র্যাব-৭-এর সহায়তায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার সেকেন্দার কলোনী এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিশু আলী হোসেনকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, অপহরণকারী জাকির হোসেন ওই শিশুর বাবার টিনশেড বাসার ভাড়াটিয়া। অপহরণকারীরা স্থানীয় একটি গার্মেন্টস কারখানায় প্যাকিংম্যান হিসেবে কাজ করতেন। অপহরণচক্রের মূলহোতা পলাতক মো. সোহান গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সঙ্গে মুক্তিপণের মাধ্যমে আদায় করা টাকা ভাগাভাগির চুক্তি করে শিশুটিকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পলাতক মো. সোহান প্রথমে শিশুকে চিপস ও খেলনা কিনে দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে সাভারের কাঠগড়া পলানপাড়া এলাকায় শিশুর নিজ বাসা থেকে রিকশাযোগে পল্লীবিদুৎ এলাকায় নিয়ে যান। পরে গ্রেপ্তার আসামিরা সোহানের সঙ্গে মিলিত হয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে যান। সেখান থেকে বাসে তারা চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানা এলাকায় যান। সেখানে ভাটিয়ারী ইউনিয়নের সেকেন্দার কলোনীতে আসামি জাকিরের চাঁচার বাসায় নিয়ে শিশুকে আটক রাখেন অপহরণকারীরা।
অপহরণকারী দলের প্রধান আসামি মো. সোহান ওই শিশুর বাবার কাছে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করেন। দর-কষাকষি করে ১৫ লাখ টাকায় সম্মত হয় শিশুর পরিবার। একপর্যায়ে শিশুটির বাবা অপহরণকারীদেরকে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠান। পরবর্তীতে বিষয়টি র্যাবকে জানালে অভিযানে নামের অভিযান দল।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারীচক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘ দিন ধরে সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণসহ নানা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত। তারা খোঁজ-খবর নিয়ে ধনী পরিবারের শিশুদেরই অপহরণ করে।