বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ সব সময়ই ছিল। আশার কথা হলো, দেরিতে হলেও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ে স্বচ্ছতা আনয়নে একটি নীতিমালা করা হচ্ছে- যার খসড়াও হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। কীভাবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হবে, তার একটি গাইডলাইন থাকছে নীতিমালায়।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থসহ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের আয়কৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহারের দিকনির্দেশনা আছে খসড়া নীতিমালায়। নির্ধারিত হারে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়, অন্যান্য খাত থেকে আদায় করা অর্থ খাতওয়ারি আলাদা ব্যাংক হিসাবে জমা রাখা এবং সংশ্লিষ্ট খাতে ব্যয় করার কথা বলা আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব উৎস থেকে আদায় করা অর্থ বার্ষিক বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা রয়েছে এতে।
বলার অপেক্ষা রাখে না অতিরিক্ত টিউশন ফি, ভর্তিবাণিজ্য, এর পেছনে কাজ করেছে অতিরিক্ত মুনাফার লোভ। আরও উদ্বেগজনক হলো, কিছু নামকরা বিদ্যালয়ে মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় অনিয়ম ও দুর্নীতির যে অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, তার মূল কারণ পরিচালনা কমিটিগুলোয় রাজনৈতিক প্রভাব। পদাধিকারবলে স্থানীয় সাংসদরা তার এলাকার চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে পারেন। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোয়ও তাদের পছন্দের ব্যক্তিরা পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ পান। এ কারণে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত স্থানীয় সাংসদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে রাজনৈতিক বিবেচনা, স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতিও অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। তাই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদকে সম্পূর্ণ রাজনীতির প্রভাবমুক্ত রাখতেও সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর্থিক শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই এবং চাই নীতিমালা দ্রুত চূড়ান্ত ও কার্যকর হোক। এতে অভিভাবকরা কিছুটা স্বস্তি পাবেন।