যথাযথ মর্যাদায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে কাতারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। দিবসটি উপলক্ষে গত শুক্রবার কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করা হয়। করোনাভাইরাস সংক্রান্ত স্থানীয় বিধিনিষেধ মেনে এদিন সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষে সীমিত পরিসরে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে ঘরোয়াভাবে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত একটি ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিহত সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি আমাদের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে রোহিঙ্গা সমস্যা, করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবিলা, বিভিন্ন আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সাফল্য এবং অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত।
দিবসটি উপলক্ষে সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি হোটেলে সীমিত পরিসরে ‘স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী’ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কাতারের প্রশাসনিক উন্নয়ন, শ্রমও ও সামাজিক বিষয়ক মন্ত্রী জনাব ইউসুফ মোহাম্মদ আল ওথমান ফাকরু উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া কাতারের ডিরেক্টর অব প্রটোকল ইব্রাহিম ইউসুফ আবদুল্লাহ ফাকরু, ডিন অব ডিপ্লোমেটিক কোর এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রধান অতিথি কর্তৃক একটি স্মারক ফলক উন্মোচন করা হয়। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ৫০ বছরের ক্রমবর্ধমান অগ্রযাত্রা, বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবেলা এবং কাতারে বাংলাদেশি অভিবাসী ও শ্রমিকদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। কাতারের আমিরের সুযোগ্য নেতৃত্বে শ্রম আইনসহ বিভিন্ন ইতিবাচক পরিবর্তনের তিনি প্রশংসা করেন। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ কাতার ভ্রাতৃত্ব পূর্ণ সম্পর্ক দৃঢ়তর করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার কথা বলেন রাষ্ট্রদূত। কাতারের শ্রম মন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানান।