আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলায় ৫০০ পাতার পূর্ণাঙ্গ আবেদন জমা দিয়েছে গাম্বিয়া। আবেদনের পক্ষে ৫ হাজার পৃষ্ঠার প্রমাণও উপস্থাপন করেছে দেশটি। গত শুক্রবার জমা দেওয়া এ আবেদনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার জন্য মিয়ানমার সরকারের দায় তুলে ধরা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটসের ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের এক কূটনীতিকও গাম্বিয়ার এ পূর্ণাঙ্গ আবেদন জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গাম্বিয়া গত বছর নভেম্বরে রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আইসিজেতে মামলা করে। আদালত মামলার প্রাথমিক শুনানির পর মিয়ানমারকে রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা রোধে অস্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দিয়ে রুল জারি করেন। গাম্বিয়ার প্রাথমিক আবেদনের পর আইসিজে মামলার সমর্থনে বেশ কিছু প্রমাণ পায়। এর ভিত্তিতে আদালত মিয়ানমারকে ওই অস্থায়ী আদেশ দেন এবং মামলাটি এগিয়ে নিতে সম্মত হন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গাম্বিয়া এ পূর্ণাঙ্গ আবেদন জমা দিল।
ফরটিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচারের প্রশ্নটি আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ও অন্যদের প্রতি ব্যাপক নৃশংস আচরণ অব্যাহত রয়েছে। গাম্বিয়ার এ আবেদনের পর মিয়ানমার আইসিজেতে পাল্টা আবেদন জমা দেওয়ার জন্য তিন মাস সময় পাবে। ফরটিফাই রাইটস মনে করে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যা রোধে এবং গণহত্যার প্রমাণ সংরক্ষণের জন্য মিয়ানমারকে এখনই আইসিজের আদেশ পালন করা উচিত।
এ বছর ২৩ জানুয়ারি আইসিজের প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুল কাফি আহমেদ ইউসুফ রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে চারটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ঘোষণা করেন। এগুলো হলো- ১, রোহিঙ্গাদের হত্যা, মানসিক ও শারীরিক নিপীড়ন ও ইচ্ছাকৃত আঘাত করা যাবে না। ২, গণহত্যার আলামত নষ্ট করা যাবে না। ৩, গণহত্যা বা গণহত্যার প্রচেষ্টা বা ষড়যন্ত্র না করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ। ৪, মিয়ানমারকে অবশ্যই চার মাসের মধ্যে লিখিত জমা দিতে হবে- তারা সেখানে পরিস্থিতি উন্নয়নে কী ব্যবস্থা নিয়েছে।