সম্প্রতি ৯১টি ‘উজি’ পিস্তল মিথ্যা ঘোষণায় জার্মানি হয়ে দেশে এসেছে। এর মধ্যে ৪৯টি অস্ত্র ইতোমধ্যে বিক্রিও হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে শুধু নিরাপত্তা বাহিনীর জন্যই নয়, পুরো দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নেই এক ধরনের উদ্বেগ বিরাজ করছে। পয়েন্ট টু-টু বোরের অত্যাধুনিক পিস্তল। নাম ‘উজি’। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীতেও এত বেশি গুলি ধারণক্ষমতার পিস্তল নেই। এটি এ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যবহৃত অস্ত্রের চেয়েও আধুনিক। উজির ম্যাগাজিন ২০ রাউন্ডের আর বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবহৃত পিস্তলে ম্যাগাজিনের ধারণক্ষমতা সর্বোচ্চ ১৫ রাউন্ড। এর পরও এ দেশে আমদানি করা হয়েছে অত্যাধুনিক এ পিস্তলটি। তবে তা কোনো বাহিনীর জন্য আনা হয়নি এবং আনার পন্থাটিও বৈধ নয়। ফলে এ ধরনের অত্যাধুুনিক অস্ত্র জঙ্গিদের হাতে পৌঁছে গেলে দেশের যে কোথাও যে কোনো সময় ভয়াবহ এক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। ইতোমধ্যে মাদককারবারিদের কব্জায় চলে গেছে এসব অস্ত্র। সঙ্গত কারণেই নিরাপত্তা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এক ধরনের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা; বিষয়টি রীতিমতো ভাবিয়ে তুলেছে তাদের। অস্ত্র জঙ্গিদের হাতে গেলে দেশের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। দেশে বর্তমানে ৮৪টি বৈধ অস্ত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীতেই রয়েছে ৩২টি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া দেশের মোট ১৪টি প্রতিষ্ঠান সরাসরি বিদেশ থেকে অস্ত্র আমদানি করতে পারে। প্রশ্ন হলো কারা কোন স্বার্থে এই অস্ত্র আমদানি করল? কাস্টমস থেকে অস্ত্রের চালান খালাস করল তারা কি জানেন। তারা জানেন না কোনটা কোন গ্রেডের অস্ত্র। দেশের প্রতি তাদের কোনো আন্তরিকতা আছে কিনা সন্দেহ। এ ছাড়া দুর্নীতিও আছে। যারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিরাপত্তা বাহিনীর অস্ত্র বিশেষজ্ঞ যৌথ মতামতের ভিত্তিতে বৈধ অস্ত্রসংক্রান্ত আইন যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। এই আমদানি ও বিক্রয় হওয়া এসব অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা প্রয়োজন এবং লাইসেন্স আবেদনকারীর সামাজিক মর্যাদা, পেশা ইত্যাদি বিষয় যাচাইয়ে আরও বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন।