ইংলিশ কিংবদন্তি পেসার জেমস অ্যান্ডারসনকে আদর্শ মানেন তিনি। সমসাময়িক কোনো বোলারকে ফলো করেন না। সব সময় নিজের মতো করেই বোলিং করার চেষ্টা করেন। তার বলে ততটা পেস নেই। বলে গতি ১৩০ থেকে সর্বোচ্চ ১৩৫। তাই সুইং নিয়েই বেশি কাজ করেন। তাতেই সাফল্যের দেখা পেলেন আবু জায়েদ রাহী।
অভিষেক ম্যাচে উইকেটশূন্য ছিলেন। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই চমক দিলেন ডানহাতি এ পেসার। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালের আগে গতকাল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব দেখালেন রাহী। বিদেশের মাটিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে ৫ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়লেন সিলেটের এই বোলার। ৯ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে এই কীর্তি গড়েন তিনি। এর আগে বিদেশের মাটিতে ওয়ানডেতে ৫ উইকেট শিকারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা, আবদুর রাজ্জাক ও জিয়াউর রহমান।
শুধু তাই নয়, ২০১৫ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে মোস্তাফিজুর রহমান পাঁচ উইকেট শিকারের পর এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো পেসার ৫ উইকেট শিকারের নজির দেখালেন। বলের দুই পাশে সুইং করাতে পারেন বলেই বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেন রাহী। বিশ্বকাপে চমক হিসেবেই দলে রাখা হয়েছে তাকে। এর আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে এই তরুণ পেসারকে যাচাই করে নিতে মাঠে নামায় টিম ম্যানেজমেন্ট। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে তার অভিষেক হওয়ার আগে গুঞ্জনÑ বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল থেকে বাদ পড়ার শঙ্কা রয়েছে তার। কেননা বোলিং বৈচিত্র্য আনতে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের চূড়ান্ত স্কোয়াডে যুক্ত করা হতে পারে তাসকিন আহমেদকে। এ অবস্থায় মাঠে নেমে অভিষেক ম্যাচটি রাঙাতে পারেননি রাহী। গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ পেয়ে বিশ্বকাপের আগেই চমক উপহার দিলেন এই নবীন বোলার।
প্রথম ম্যাচের মতো গতকালও ইনিংসের শুরুতেই নতুন বল তুলে দেওয়া হয় রাহীর হাতে। ৬ ওভারের প্রথম স্পেলের শেষ ওভারেই উইকেটের দেখা মেলে তার। শর্ট বলে অ্যান্ডি বালবার্নিকে ফেরান। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ানকে সাজঘরমুখী করেই আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম উইকেট শিকারের স্বাদ পান রাহী। এর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে বেশ ভোগাচ্ছিলেন স্টার্লিং ও পোটারফিল্ড। দেড়শ রানের জুটি গড়ে সদর্পে এগিয়ে যাচ্ছিলেন এই দুই আইরিশ। কিছুতেই এ জুটি ভাঙা যাচ্ছিল না। ৪৫তম ওভারে আবারও বোলিংয়ে আসেন রাহী। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে ছিলেন পোর্টারফিল্ড। ওভারের চতুর্থ বলেই এই আইরিশের সেঞ্চুরির স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেন তিনি।
অফ স্টাম্পের বাইরে বল তাড়া করতে গিয়ে এক্সট্রা কাভারে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দেন পোর্টারফিল্ড (৯৪)। এর পর চলতে থাকে রাহী-ম্যাজিক। দ্বিতীয় স্পেলের দ্বিতীয় ওভারে সেঞ্চুরিয়ান স্টার্লিং (১৩০) ও ও’ব্রায়েনের দুটি উইকেট শিকার করে স্বস্তি এনে দেন তিনি। নিজের নবম ওভারের চতুর্থ বলে উইলসনকে সাজঘরে ফিরিয়ে দিয়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্বিতীয় ম্যাচেই পাঁচ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব দেখালেন এই তরুণ। আয়ারল্যান্ডকে তিনশ রানের মধ্যে থামিয়ে দিতে রাহীর সঙ্গে প্রশংসিত বোলিং করেছেন সাইফউদ্দিন। ৯ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে ২ উইকেট পান এই পেস-অলরাউন্ডার।