লেবাননে গত ১৫ মে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেও কমছে না বাংলাদেশিদের দুর্ভোগ। দেশটিতে বসবাসরত প্রায় ৭০ হাজার বাংলাদেশির প্রত্যাশা ছিল, নির্বাচন পরবর্তী নতুন সরকার দেশটির অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে নতুন উদ্যেমে যাত্রা শুরু করবে। কিন্তু নির্বাচনের প্রায় ১ মাস পেরিয়ে গেলেও বিভিন্ন গোষ্ঠীর মতবিরোধের কারণে রাজনৈতিক দলগুলো এখনো একটি পূর্ণাঙ্গ সরকার গঠন করতে পারেনি। আগের তত্ত্ববধায়ক সরকারের নেতৃত্বেই চলছে দেশটির শাসন ব্যবস্থা। মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি, চিকিৎসা ও বিদ্যুৎসহ সকল খাতেই সমস্যা সেই আগের মতই রয়েছে।
ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, করোনা মহামারি ও রশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ, সেইসাথে ২০২০ সালে বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরনের কারণে পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ৩ বছরে বৈধ-অবৈধ বাংলাদেশিসহ অন্যান্য দেশের প্রবাসীরা নিজ দেশে চলে যাওয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সৃষ্টি হয়েছে শ্রমিক সংকট। চাহিদা অনুযায়ী শ্রমিক পাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। ভিসা খোলা থাকলেও ডলার সংকটের কারনে নতুন করে তেমন শ্রমিক আসছে না দেশটিতে। নির্বাচনের পরে ডলারের বাজার স্থিতিশীল হবে, এমন আশায় অনেকেই দেশটিতে থেকে গেলেও বর্তমানে নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত তারা।
দেশটিতে কর্মরত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশিরা জানায়, বর্তমানে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই মাসিক বেতন আগে ডলারে পরিশোধ না করলেও বর্তমানে স্থানীয় পাউন্ডের পাশাপাশি কিছুটা ডলারে পরিশোধ করছে। তাই বাংলাদেশিরা পূর্বের তুলনায় বর্তমানে কিছুটা হলেও আর্থিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। পাশাপাশি দেশেও পরিবারকে কিছুটা আর্থিক সহায়তা করতে পারছে।
বৈরুতের একটি ক্লিনিং কোম্পানিতে কর্মরত নূর হোসেন বলেন,‘নির্বাচনের পরেও পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হয়নি। কোম্পানি বলছে বেতন বাড়িয়ে দিবে না। তবে ইচ্ছে হলে নিজ দেশে চলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। এ অবস্থায় খুব মানসিক চাপে রয়েছি।’
অন্য একটি ক্লিনিং কোম্পানিতে কর্মরত কয়েকজন বাংলাদেশি বলেন, আগে কোম্পানি ডলারে বেতন দিত না। আজ ৭ মাস ধরে কোম্পানি স্থানীয় পাউন্ডের পাশাপাশি সামান্য ডলার দিচ্ছে। তাই নিজে খরচ করেও পরিবারকে সামান্য আর্থিক সাহায্য করতে পারছি।
লেবাননের বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম সচিব আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
খুব দ্রুত একটি নতুন সরকারের অধীনে দেশটি তাদের পূর্বের মন্দাবস্থা কাটিয়ে অর্থনৈতিকভাবে পুনরায় ঘুরে দাঁড়াবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশিরা।