ক্ষত রেখে নামছে বন্যার পানি
বৃষ্টিপাত না হওয়া ও নদ-নদীর পানি কমায় দেশের প্রায় সব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও এর ক্ষত রয়ে গেছে। দুর্ভোগ কমেনি বানভাসিদের। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরছে মানুষ। বন্যার পানিতে ভেসে আসা ময়লা-আবর্জনা ও জমে থাকা পানি থেকে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে অনেক এলাকায় ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ দেখা দিচ্ছে।
যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি অসহায় পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। বন্যা সময়ের সমস্যা ও পানি নেমে যাওয়ার সমস্যা আলাদা। তথ্য-উপাত্ত বিবেচনায় নিয়ে বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসন কর্মসূচির পরিকল্পনাও এখন থেকেই নেওয়া উচিত। কারণ পানি নামতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে এই কাজ শুরু করতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে।
বন্যার তাৎক্ষণিক বিপন্নতা যতটা নজরে পড়ে, দীর্ঘমেয়াদি ক্ষয়ক্ষতি ততটা নয়। বন্যা যখন চলছে- তখন খাবার, ওষুধপথ্য ও জরুরি ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বন্যাদুর্গত মানুষের কাছে ছুটে যাওয়া অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু বন্যাদুর্গত মানুষ, বিশেষত কৃষকরা যে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির শিকার হন- তা কাটিয়ে উঠতে তাদের সহযোগিতা করাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কৃষকদের দুরবস্থা কেবল তাদের জন্যই কষ্টকর নয়, এটি জাতীয় অর্থনীতির জন্যও একটি বড় সমস্যা। তাই সরকারের উচিত এই কৃষকদের মধ্যে যাদের ঋণ রয়েছে, তাদের ব্যাপারে কিছু ছাড়ের ব্যবস্থা করা। অন্ততপক্ষে এই সময়ে তাদের ঋণ আদায় বন্ধ রাখা উচিত। আরও প্রয়োজন তাদের জন্য বীজ, সার, কীটনাশকসহ সব কৃষি উপকরণ সহজলভ্য ও নতুন করে পুঁজির ব্যবস্থা করা।