advertisement
advertisement
advertisement

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরেক শিশুর গলা কাটা লাশ

চট্টগ্রামে শিশু আয়াত হত্যার আসামি ২ দিনের রিমান্ডে

চট্টগ্রাম ব্যুরো ও নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
২৭ নভেম্বর ২০২২ ১২:০০ এএম | আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২২ ১২:১০ এএম
advertisement

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাঈনুল হাসান আবু বকর (৪) নামের এক শিশুর বস্তাবন্দি গলা কাটা লাশ স্থানীয় একটি টিউবওয়েলের সামনে থেকে উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় শহরের কান্দিপাড়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। আবু বকর শহরের কান্দিপাড়া এলাকার হাসান মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাব্বির নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে চট্টগ্রাম নগরীর আলীনা ইসলাম আয়াত (৫) নামে এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ ৬ টুকরো করে সাগরে নিক্ষেপের ঘটনায় অভিযুক্ত আবের আলীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. সাদ্দাম হোসেনের আদালত। গতকাল এ আদেশ দেওয়া হয়। আবের আলীর ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান বলেন, আদালত আসামির

advertisement

দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এখন তাকে নিজ হেফাজতে নিয়ে হত্যাকাণ্ডের কারণ জানতে চাইব।

নিহত শিশু আয়াত নগরীর ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা ও সাহিদা আক্তার তামান্না দম্পতির মেয়ে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আবের আলী শিশু আয়াতের পরিবারের মালিকানাধীন বাসার ভাড়াটিয়া ছিলেন।

advertisement

গত ১৫ নভেম্বর নগরীর ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকা থেকে স্থানীয় মক্তবে পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়। ওই ঘটনায় শিশুটির বাবা সোহেল নগরীর ইপিজেড থানায় জিডি করেন। এ বিষয়ে পিবিআই তদন্ত করে আবের আলীর সম্পৃক্ততা পায়। তার তথ্যের বরাতে পিবিআই বলছে, শিশুটিকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি করার উদ্দেশ্য ছিল ঘাতকের। কিন্তু ঘটনার দিন তার মোবাইলে থাকা সিমটি কাজ না করায় সে শিশুটির পরিবারকে ফোন দিতে পারছিল না। একপর্যায়ে শিশুটি চিৎকার শুরু করে। ১৬ নভেম্বর সকালে ভাড়া বাসাতেই শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে আবের। এর পর লাশ একটি ব্যাগে ভরে তাদের ইপিজেডের পুরোনো ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে সুযোগ বুঝে বাথরুমে আয়াতের লাশটি ৬ টুকরো করে আলাদা ৬টি প্যাকেটে ভরে। ১৭ নভেম্বর তিনটি প্যাকেট ২০ ফুট গভীর বেড়িবাঁধসংলগ্ন নালায় ও বাকি তিনটি প্যাকেট সাগরে ফেলে দেয়। এ তথ্য পেয়ে শুক্রবার পিবিআই শিশুটির খণ্ডবিখণ্ড মরদেহ উদ্ধারে নামে। কিন্তু গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই শিশুটির দেহাবশেষের কোনো কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি পিবিআই।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকার হাসান মোল্লার ছেলে চার বছরের আবু বকর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে নিখোঁজ ছিল। পরিবার ও স্বজনরা পুরো কান্দিপাড়া ও তিতাস নদীর পাড় এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে কান্দিপাড়া এলাকার একটি টিউবওয়েলের সামনে থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফুজ্জামান হিমেল শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মাইনুলের চাচা মাহমুদ মিয়া জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে আবু বক্কর আমাকে একটি ব্রাজিলের জার্সি কিনে দিতে বলে। আমি আমার ভাগ্নেকে ডেকে টাকা দিয়ে দুজনের জন্য দুটি জার্সি কিনে আনতে বলি। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই আমাকে জানালেন আবু বক্করকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করতে থাকি। পরে খবর পাই টিউবওয়েলের কাছে বস্তাবন্দি মরদেহ পড়ে আছে।

চিকিৎসক আরিপুজ্জামান হিমেল বলেন, শিশু আবু বকরকে হাসপাতালে গলা কাটা অবস্থায় আনা হয়েছে। হাসপাতালে আনার আগেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত রহস্যের উন্মোচন করা হবে এবং প্রকৃত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হবে।