advertisement
advertisement
advertisement

ইংল্যান্ডের ভয় সেনেগালকে

ক্রীড়া ডেস্ক
৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:০০ এএম | আপডেট: ৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:৩৩ এএম
সেনেগাল ম্যাচের আগে কঠোর অনুশীলনে ইংল্যান্ড ফুটবল দল। কোচ সাউথগেটের শিষ্যরা আজ কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করতেই মাঠে নামবে। তবে ছেড়ে কথা বলবে না সেনেগালও। বিশ্বকাপে দুই দশক আগের সুস্মৃতি ফেরাতে মরিয়া আফ্রিকানরা -এএফপি
advertisement

কাতার বিশ^কাপ চমকের বিশ^কাপ। এবারের বিশ^কাপ অঘটনের বিশ^কাপ। টুর্নামেন্টের গ্রুপপর্বজুড়ে দাপট দেখিয়েছে এশিয়ান ও আফ্রিকান দলগুলোতে। নকআউট পর্বে ১৬ দলের পাঁচটিই টিকিট কেটেছে এই দুই মহাদেশ থেকে। এদের মধ্যে অন্যতম সেনেগাল। গ্রুপপর্বেই এ দলটির বিদায় দেখে ফেলেছিলেন অনেকেই।

নেপথ্য কারণ অধিনায়ক ও সেরা খেলোয়াড় সাদিও মানেকে স্বপ্নযাত্রায় না পাওয়া। চোট নিয়ে কাতার মহাযজ্ঞ শুরুর আগেই লম্বা সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন বায়ার্ন মিউনিখ স্ট্রাইকার। কিন্তু মানের ইনজুরি সেনেগালের জন্য শাপেবর হয়েই এসেছে। অধিনায়ককে হারানোর শোককে রীতিমতো শক্তিতে রূপান্তর করেছেন তেরঙ্গার সিংহরা। দুই দশক পর বিশ^কাপের শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিয়েছেন তারা। নিজেদের ইতিহাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার প্রথম রাউন্ডের গণ্ডি পাড়ি দিলেন আফ্রিকান জায়ান্টরা।

advertisement

আজ প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে সেনেগালের ইতিহাসকেই ভয় পাচ্ছে শিরোপাপ্রত্যাশী ইংল্যান্ড। ২০০২ জাপান-কোরিয়া আয়োজিত যৌথ বিশ^কাপে সবাইকে চমকে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গিয়েছিল সেনেগাল। ইংলিশদের ভয়ের কারণÑ এবারের প্রতিযোগিতাটাও হচ্ছে এশিয়ার মাটিতে। তা ছাড়া আগে কখনো এই দলটির মুখোমুখি হননি ইংলিশরা। তাই তাদের শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা চিহ্নিত করাটাও কঠিন হয়ে পড়েছে থ্রি লায়নদের জন্য। দুই দলের মধ্যে র‌্যাংকিংয়ের পার্থক্য ১৩ ধাপের। সেনেগাল আছে ১৮ নম্বরে। ৫-এ ইংল্যান্ড।

র‌্যাংকিং, শক্তিমত্তা এবং বিশ^কাপ অভিজ্ঞতায় সেনেগালের সঙ্গে ইংল্যান্ডের পার্থক্যটা বিস্তর। আজকের ম্যাচে ফেভারিট তারাই। কিন্তু অঘটনের বিশ^কাপে কোনো কিছুরই নিশ্চয়তা দেওয়া কঠিন। ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের ভয়টা এখানেই। গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ইংল্যান্ড কোচ বলেছেন, ‘র‌্যাংকিংয়ের হিসেবে আমরা এই ম্যাচে ফেভারিট। কিন্তু সেনেগাল ভয়ঙ্কর একটা প্রতিপক্ষ হয়ে উঠবে।’

advertisement

কেন আফ্রিকানদের ভয় পাচ্ছে ইংল্যান্ড, সেটির অবশ্য ব্যাখ্যাও দিয়েছেন সাউথগেট। সেনেগালের কয়েকজন খেলোয়াড় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলছেন। ইংল্যান্ডের হাঁড়ির খবর কম-বেশি জানা আছে সেনেগালিজদের। ইংলিশ কোচ যথার্থই বলেছেন, ‘আমরা জানি তাদের অনেক খেলোয়াড় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ এবং ইউরোপজুড়ে খেলছেন।’ ইংলিশ কোচের মতে, সেনেগালের এই দলটি কুড়ি বছর আগের সুখস্মৃতিকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিতে পারে। তাই ছাত্রদের সতর্ক করে দিয়েছেন সাউথগেট।

মানের অনুপস্থিতিতে সেনেগালের তুরুপের তাস হয়ে উঠেছেন ইংলিশ ক্লাব চেলসির গোলরক্ষক এডোয়ার্ড মেন্ডি ও কলিদু কুলিবালি। প্রিমিয়ার লিগের আরেক দল ওয়াটফোর্ডে খেলছেন ইসমাইলা সার। তবে এভারটনে খেলা ইদ্রিসা গায়ার জন্য দুঃসংবাদ। নিষেধাজ্ঞার কারণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামা হচ্ছে না তার। শেষ ষোলোর অগ্নিপরীক্ষার আগে সেনেগালের এই একটিই অস্বস্তি।

তবে পূর্বসূরিদের নিয়ে আশা দেখছেন সেনেগালের সাবেক ফুটবলার আলেসানে এন’ডুর। তিনি বলেছেন, ‘আমরা ইংলিশ খেলোয়াড়দের সম্পর্কে জানি। তারা খুব শক্তিশালী এবং আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে। তাদের দলটা দুর্দান্ত। কিন্তু সেনেগালের একটা সুযোগ আছে। সেনেগালের অনেক খেলোয়াড় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ কিংবা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলে। আমরা ইংলিশ ফুটবল সম্পর্কে আমাদের জানাশোনা আছে। যোগ্য দল হিসেবে আমরা এখানে এসেছি এবং ম্যাচটা খেলতে চাই। আমাদের সুযোগটা নিতে হবে। আশা করছি ঐতিহাসিক একটা ফল হবে।’ উত্তরসূরির এসব কথা কুলিবালি-মেন্ডিদের আত্মবিশ^াসের পালে বাড়তি হাওয়া দিতে পারে।

২০০২ বিশ^কাপের সেনেগাল দলের একজন আছেন এবারের দলে। তিনি আলিও চিসে। তার নেতৃত্বেই এশিয়ার প্রথম বিশ^কাপে চমকে দিয়েছিলেন আফ্রিকান জায়ান্টরা। চিসে এখন মাঠে নেই, এবার তিনি ডাগ আউটে। সেরা অস্ত্রকে ছাড়াই দলকে এনে দিয়েছেন নকআউট পর্বের টিকিট। এখন আরও বড় স্বপ্ন দেখছেন চিসে। তার চোখ অনেক দূরে। কতটা? সেটির একটি আলামত মিলতে পারে আজ।