advertisement
advertisement
advertisement

মৃত্যুঝুঁকিতে পাঠদান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে

লোহাগড়া

এনামুল কবীর টুকু, নড়াইল
৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:০০ এএম | আপডেট: ৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:৪৪ এএম
advertisement

বিদ্যালয় চলাকালীন হঠাৎ করেই ধসে পড়ে ছাদের পলেস্তারা। মুহূর্তেই ছাদের বড় একটি অংশের দুর্বল রডগুলো বেরিয়ে পড়ে। এদিকে ভেঙেপড়া পলেস্তারা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে বেঞ্চের সবখানে। তবে ভাগ্যক্রমে রক্ষা পায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ দৃশ্য নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। পলেস্তারা ভেঙেপড়া এ কক্ষটিতে নবম শ্রেণির পাঠদান হয়ে থাকে। গত ২৪ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে ভয়ঙ্কর এ ঘটনা ঘটে। ভাগ্য ভালো ওই দিন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কক্ষটিতে ছিল না। ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী (টেস্ট পরীক্ষা) ফল ঘোষণার সময় শিক্ষার্থীরা অন্য কক্ষে থাকায় বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা। প্রায় সাত বছর ধরে ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তবু কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।

আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত। এর পর ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে তিন কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবনটি নির্মিত হয়। এর মধ্যে একটি কক্ষে নবম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়। যেটির পলেস্তারা ভেঙে পড়েছে। এই শ্রেণিকক্ষের পাশেই প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের অফিস কক্ষ। তার পাশেই ছাত্রী মিলনায়তন। বর্তমানে তিনটি কক্ষের অবস্থা খুবই নাজুক। বছর দুয়েক আগে শিক্ষকদের অফিস কক্ষের পলেস্তারাও ভেঙে পড়েছিল। এ ছাড়া কক্ষগুলোর ফ্লোরও ভেঙে দেবে গেছে। সব মিলিলে ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। নিরুপায় হয়ে ভবনটি ব্যবহার করতে হচ্ছে। কারণ বিদ্যালয়টিতে এ ভবন ছাড়া আর কোনো পাকা ভবন নেই। এ ছাড়া দুটি টিনশেডের ঘর থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এখানে চারটি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও প্রয়োজন সাতটির। আর টিনের ঘরে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের অফিস করার মতো ভালো ব্যবস্থা নেই। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া ও মাহফুজ শেখ বলে, বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় চলাকালীন জরাজীর্ণ ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ায় আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। ওই কক্ষে আর পাঠদান হচ্ছে না, ঢুকতেও ভয় পাচ্ছি। কর্তৃপক্ষ এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন একটি ভবন দেবেÑ এটিই আমাদের প্রত্যাশা।

advertisement

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলমগীর গাজী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নতুন ভবন পাচ্ছি না। ভগ্নদশা ভবনটিতে পাঠদান দেওয়াসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের অফিস করতে ভয় করছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছি। কখন কী হয়, সেই আতঙ্কের মধ্যেই থাকতে হয়। আমাদের দাবি, নতুন একটি ভবন চাই।

প্রধান শিক্ষক নির্মল কুমার কুণ্ডু জানান, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে একটি মাত্র পাকা ভবন থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে খুব সমস্যা হচ্ছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে। অথচ অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। আমাদের একটিই দাবিÑ নতুন একটি ভবন চাই। আশা করছি সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন।

advertisement

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম ছায়েদুর রহমান বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে নতুন ভবন অনুমোদনের জন্য যে ধরনের প্রক্রিয়া রয়েছে, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করা হবে।