দশমিনায় ২৮ কিলোমিটার সড়কে নেই সতর্কীকরণ চিহ্ন
দশমিনা-ঢাকা মহাসড়কের দশমিনা থেকে বগা কলেজ গেট পর্যন্ত এলজিইডির ২৮ কিলোমিটার সড়কে শতাধিক বাঁক ও মোড় বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের জন্য মরণফাঁদ হয়ে আছে। এসব বাঁক ও মোড়ে সতর্কীকরণ চিহ্ন না থাকায় দ্রুতগামী যানবাহন ও মালবাহী গাড়ি যে কোনো সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
দশমিনা থেকে বগা গেট পর্যন্ত সড়কের মাছুয়াখালী, বড়গোপালদী, ঠাকুরের হাট, বেতাগী, ভাঙ্গাব্রীজ, মিলঘর, মাধবপুর ও বগা এলাকার বাঁক ও মোড়গুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় প্রতিদিন এই সড়কে যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস, পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ, মাহিন্দ্র, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলসহ কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। অনেক সময় দূর থেকে এসব বাঁক ও মোড় লক্ষ করা যায় না। এতে প্রতিবছরই ছোট-বড় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে সড়কে। পদ্মা ও পায়রা সেতু উদ্বোধনের পর ওই সড়কের গুরুত্ব বহুলাংশে বেড়েছে।
এদিকে মহাসড়কের এই অংশের অধিকাংশ স্থানে রয়েছে একাধিক হাটবাজার। তাতে উভয়মুখী যানবাহন চলাচল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে মাছুয়াখালী, বড়গোপালদী, ঠাকুরের হাট, বেতাগী, ভাঙ্গাব্রীজ, মিলঘর ও মাধবপুর এলাকায় মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা বাজারগুলোতে যানবাহন চলাচলের নির্দিষ্ট জায়গা খালি না রেখে ভ্রাম্যমাণ ও অস্থায়ী দোকান বসছে। এতে করে ওইসব বাজার এলাকায় যানবাহন ধীরগতিতে চালানো হয়। পাশাপাশি দাঁড় করে রাখতে হয় দীর্ঘক্ষণ। মাঝে মধ্যে সৃষ্টি হয় যানজট। তাতে সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে বিঘ্ন ঘটে যাত্রীদের।
দশমিনা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী বাস ধানসিঁড়ি পরিবহনের চালক মো. সেলিম দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, দশমিনা থেকে বগা ফেরিঘাট পর্যন্ত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও মোড়ের কারণে ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে হয়। এতে যাত্রীদের সময় নষ্ট হয়। অনেক ক্ষেত্রে যাত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ কাজে বিঘ্ন ঘটে। ভয়াবহ বাঁকগুলোর স্থানে রাস্তা সোজা করার জন্য কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া জরুরি।
উপজেলা সদরের লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা বরিশালগামী যাত্রী মো. ইমরান বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এসব বাঁক ও মোড়ে সতর্কীকরণ চিহ্ন বসায়, তাহলে ভবিষ্যতে বড় বড় দুর্ঘটনা থেকে যানবাহন ও সাধারণ যাত্রীরা কিছুটা হলেও রক্ষা পেতে পারে।
ফাঁয়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন দশমিনার ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আব্দুর রশিদ বলেন, ওই সড়কের কোথাও দুর্ঘটনার খবর পেলে অসংখ্য মোড় ও বাঁকের কারণে আমাদের ব্যাপক সময় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর সময় নষ্ট হলে দুর্ঘটনাস্থলে ক্ষতির পরিমাণ বেশিই হয়।
অ্যাম্বুলেন্স চালক জামাল জানান, এ রাস্তায় গাড়ি চালাতে ব্যাপক সময় ব্যয় হয়, যা মুমূর্ষু রোগীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এলজিইডি পটুয়াখালীর সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী বিপুল কুমার বিশ^াস মুঠোফোনে বলেন, সতর্কীকরণ চিহ্নসংবলিত সাইনবোর্ড বসানোসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার বিষয়গুলো আমরা পরবর্তী সমন্বয় সভায় তুলে ধরব এবং রোড সাইন উল্লেখপূর্বক সদর দপ্তরে পাঠানোর পর অ্যাপ্রুভ হলে আমরা এগুলোর কাজ শুরু করব। অত্যধিক বাঁক ও মোড়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, রাস্তা সোজা করতে গেলে ভূমি অধিগ্রহণের ব্যাপার আছে। রাস্তার গতিপথ পরিবর্তন করে অন্য জায়গা দিয়ে সোজা রাস্তা করা দুরূহ ব্যাপার।