ভারতে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে কার কতখানি তেজ থাকবে, বিধানসভার নির্বাচনগুলো এরই একটা আভাস দিয়ে থাকে। চব্বিশের কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অন্যতম কেন্দ্রীয় প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের এমনই একটা পরীক্ষা হয়ে গেল গুজরাট ও হিমাচলে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের অনলাইনে সরাসরি প্রচারিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে বলা যায়- গুজরাটের বিধানসভায় মোদির গেরুয়াশিবির বাজিমাত করেছে। তবে হিমাচলে হোঁচট খেয়েছে, হাতছাড়া হয়েছে সে রাজ্যের ক্ষমতা। গুজরাটে কোনো রকম উঠে দাঁড়াতে না পারলেও হিমাচলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে ভারতের সর্বপ্রাচীন দল কংগ্রেস।
গুজরাটে মোট আসন ১৮২টি। জয়নির্ধারণী আসনসংখ্যা হলো ৯২। কংগ্রেস মাত্র ১৭টি আসনে জয় পেয়েছে। বিজেপি এবার পেয়েছে ১৫৬টি। গুজরাটে বিজেপি সবচেয়ে ভালো ফল করেছিল ২০০২ সালে। সেবার তারা পেয়েছিল ১২৭ আসন। তার পর থেকে প্রতি ভোটে তাদের আসনসংখ্যা কমেছে। ২০১৭ সালে তারা পায় সর্বনিম্ন ৯৯ আসন। এবার নিজেদের রেকর্ড তো বটেই, রাজ্য বিধানসভা ভোটের ইতিহাসে সম্ভবত নতুন রেকর্ড গড়েছে দলটি। ১৯৮৫ সালের নির্বাচনে মাধব সিন সোলাঙ্কির নেতৃত্বে কংগ্রেস জিতেছিল ১৪৯ আসন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ভূপেন্দ্র প্যাটেল দ্বিতীয় দফায় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন ১২ ডিসেম্বর। এই রাজ্যেরই মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। এ রাজ্যে বিজেপির বিশাল জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, ‘এবার অধিক সংখ্যক তরুণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। তারা বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপির রূপকল্প ও প্রতিশ্রুতিতে তারা আস্থাশীল। মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। কারণ, এ দলটি সব ক্ষেত্রেই কাজ করেছে। মানুষ জানে, দেশের উন্নয়নের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা বিজেপিরই আছে।’
হিমাচলে মোট আসন ৬৮টি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের রেখা হলো ৩৫ আসন। কংগ্রেস এখানে পেয়েছে ৪০ আসন। মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুরের নেতৃত্বে বিজেপি পেয়েছে ২৫ আসন। কংগ্রেসকে এমন সাফল্য এনে দিয়েছেন রাজ্য কংগ্রেসের প্রধান প্রতিভা সিং।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, হিমাচলে জয়ের পর কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী- এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে কংগ্রেসের মধ্যে। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা রাহুল গান্ধী গতকাল টুইটারে বলেছেন, ‘এমন বড় বিজয় এনে দেওয়ার জন্য হিমাচলের মানুষকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের প্রাণঢালা অভিনন্দন। আপনার কঠোর পরিশ্রম করেছেন। এই বিজয়ের জন্য আপনাদের শুভাশীষ প্রাপ্য। আবার নিশ্চিন্ত করতে চাই- জনতার কাছে যে অঙ্গীকার আমরা করেছি, অক্ষরে অক্ষরে তা পূরণ করব।’