advertisement
advertisement
advertisement

জামিন মেলেনি, কারাগারে মির্জা ফখরুল ও আব্বাস

টুকুসহ ৭ জনের জামিন নামঞ্জুর

নিজস্ব ও আদালত প্রতিবেদক
১০ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:০০ এএম | আপডেট: ৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১১:১৪ পিএম
advertisement

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার বিকেলে তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এ আদেশ দেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদের বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মামলায় দুই নেতাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল আদালতে পাঠানো হয়েছিল। আটকের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মির্জা ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম বলেন, আমার স্বামী রাতে বাসায় ফিরে ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তার শরীর বেশ খারাপ ছিল। পুলিশ সদস্যরা রাত ৩টার দিকে বাসায় ঢুকে আধঘণ্টার মধ্যে তাকে নিয়ে যায়। আটকের সময় আমাদের বাসার সামনের রাস্তার বাতি নিভিয়ে ফেলা হয়েছিল। চার থেকে পাঁচটি গাড়ি নিয়ে রাত ১০টা থেকে এলাকায় পুলিশের টহল ছিল। পরে রাত ৩টার দিকে তারা দরজা খুলতে বলে। এ সময় প্রহরীরা খুলতে চাচ্ছিল না, তখন তাদের মারধর করা হয়।

advertisement

মির্জা আব্বাসের স্ত্রী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। আমাকে ডেকে বলল তাকে (মির্জা আব্বাস) নিয়ে যাওয়া হবে এখন। পুলিশ জানায়,

মির্জা আব্বাসের সঙ্গে কথা আছে। আমি তাদের বলি এখানেই কথা বলেন। তারা বলে, না ওনাকে আমাদের সঙ্গে অফিসে যেতে হবে। তারপর তাকে নিয়ে যায়।

advertisement

গতকাল দুপুর সোয়া ২টার দিকে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গত বুধবার নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের।

জানা গেছে, গতকাল বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ফখরুল ও আব্বাসকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে সিএমএম আদালতে হাজির করেন। এ সময় দুই নেতাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। রিমান্ড আবেদন না থাকায় শুনানি হয় তাদের হাজতখানায় রেখেই।

কারাগারে আটক রাখার আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, গত ৭ ডিসেম্বর পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশকে আক্রমণ ও গুরুতর জখম করে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। মামলার তদন্তকালে মির্জা ফখরুল ও আব্বাস ওই ঘটনার পরিকল্পনাকারী, উসকানিদাতা এবং নির্দেশদাতা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তাই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন।

এ সময় আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ওমর ফারুক ফারুকী, সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেজবাহ দুই নেতার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শুনানিকালে মির্জা ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম, মেয়ে মির্জা সাফারুহ সুমি এবং মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত জামিন নামঞ্জুর আদেশ দেওয়ার পর বিএনপির দুই নেতার পক্ষে আইনজীবীরা কারাগারে তাদের ডিভিশনের প্রার্থনা করেন। শুনানি শেষে বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশনের বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। ফখরুল ও আব্বাসকে এদিন আদালতে আনার পর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এতে আদালত চত্বরজুড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

এদিকে পল্টন থানার নাশকতার মামলায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সহসভাপতি নুরুল ইসলাম নয়নসহ ৭ জনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এ আদেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার এসআই বিজন কুমার বিশ্বাস রিমান্ড শেষে গতকাল আসামিদের আদালতে হাজির করেন। গত ৪ ডিসেম্বর আসামিদের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।