মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের দমনের উদ্দেশ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশজুড়ে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে। ‘চিহ্নিত’ মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে শতাধিক তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। মাদকসংক্রান্ত অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান পর্যন্ত করা হয়েছে। কিন্তু এতকিছু সত্ত্বেও মাদকদ্রব্যের অবৈধ ব্যবসা ও সেবনে রাশ টেনে ধরা যায়নি। গতকাল আমাদের সময়ের প্রতিবেদনে জানা যায়, এক সময়ের ৩৯শ টাকা বেতনের কর্মচারী নূরুল ইসলাম এখন শতকোটি টাকার মালিক। তার এ বিপুল বিত্তবৈভব এসেছে মরণনেশা ইয়াবা ‘ম্যাজিকে’।
নূরুল ইসলাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চুক্তিভিত্তিক চাকরি পান। তখন তার মাসিক বেতন ছিল ৩৯শ টাকা। সে সময় বন্দরে পণ্য খালাস ও পরিবহনের সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আনার একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন তিনি। বন্দরে নিজের লোক নিয়োগের পর ২০০৯ সালে চাকরি ছেড়ে দেন। এর পর আস্থাভাজন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য আমদানির আড়ালে ইয়াবা পাচার শুরু করেন। পাশাপাশি নিয়োগবাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপকর্মের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হন নূরুল ইসলাম।
ইয়াবা বাংলাদেশে তৈরি হয় না। প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে চোরাচালান হয়ে আসে। আমাদের স্থল ও সমুদ্রসীমায় শক্তিশালী সীমান্ত বাহিনী আছে। চোরাচালানিদের ধরার জন্য তাদের কাছে আধুনিক সরঞ্জামও আছে। এর পরও কেন সীমান্ত দিয়ে মাদক আসা বন্ধ করা যাবে না? মিয়ানমার দেশটির যে রাজনৈতিক বাস্তবতা, তাতে তাদের কাছ থেকে কতটুকু সহায়তা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে সংশয় খুবই স্বাভাবিক। বাংলাদেশকে এ ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্সের নীতি নিতে হবে। সীমান্তপথে কোনোভাবেই যাতে মাদক প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
সীমান্তের দরজায় ফাঁকফোকর ও দেশের প্রভাবশালী চক্র ও নূরুল ইসলামের মতো লোক যদি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে তবে কোনো অভিযানই সুফল দেবে না।