ইদানীং আত্মহত্যা নামক ব্যাধিটি সমাজে প্রকট আকার ধারণ করেছে। পত্রিকার পাতা খুললেই কোনো না কোনো একটি আত্মহত্যার ঘটনা চোখে পড়ছেই। গতকাল দৈনিক আমাদের সময়ে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, বগুড়ায় গত এক বছরে ৩৮৫ জন আত্মহত্যা করেছেন। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা পুলিশের এক পরিসংখ্যানে এ চিত্র উঠে এসেছে। ওই হিসাবে বগুড়ায় প্রতিমাসে গড়ে ৩২ জন আত্মহত্যা করেছেন।
সম্প্রতি যে আত্মহত্যাগুলো হচ্ছে, এর বেশিরভাগই টিনএজার। অতিঠুনকো ঘটনা নিয়ে অভিমান বা হতাশা থেকে আত্মহত্যা করে বসছে উঠতি বয়সীরা। এই প্রজন্মের এসব মেধাবী ছেলেমেয়ে যদি আত্মহত্যার মতো অপ্রত্যাশিত অপরিমাণদর্শী চিন্তাভাবনার পথ বেছে নেয়, তা হলে পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে আমরা কোথায় দাঁড়াব। একেকজন একেক কারণে জীবনের এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আজকাল মানসিক চাপকে অনেকেই দোষারোপ করছেন। বর্তমান প্রগতির যুগে অবশ্যই তরুণ প্রজন্মের ওপর মানসিক চাপ বাড়ছে। কিন্তু আত্মহত্যা মানসিক চাপ কমানোর যে কোনো সমাধান নয়, বরং মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণÑ এ কথা বুঝতে হবে। এ ছাড়া একমাত্র পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কাউন্সেলিংই পারে এ ধরনের আত্মহত্যার প্রবণতাকে রোধ করতে এবং মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করতে।
জীবন একটি ঘটনায় থেমে থাকে না। প্রত্যেকেরই কিছু করার সুযোগ থাকে। দিন দিন আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। এ থেকে তরুণসমাজকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন সচেতনতা সভা ও সামাজিক কার্যক্রম। এ জন্য এলাকাভিত্তিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। তবেই আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা যাবে। আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ ছাড়া মানসিক রোগ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিরও প্রয়োজন রয়েছে।