চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ব্যবসায়ী রকিব সরকার বলেছেন, ‘আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই মিথ্যা মামলাগুলো আইনিভাবেই মোকাবিলা করবো। সত্যের জয় হবে। আমি কোনো অপরাধ করিনি।’
পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন রকিব। সেখানে ফুল দিয়ে তাকে স্বাগত জানান তার স্ত্রী মাহি। এরপর সেখান থেকে তারা ঢাকায় তার বাসভবনে চলে যান।
এর আগে, গতকাল শনিবার সকালে ওমরাহ শেষে ঢাকায় আসেন তার স্ত্রী মাহিয়া মাহি। বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে বাসন থানায় নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। দুপুর পৌনে ২টার দিকে তাকে গাজীপুর জেলা কারাগারে নেওয়া হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে মাহির আইনজীবীরা আদালতে তার জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন দেন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন।
কারামুক্ত হয়ে তিনি তাদের ফারিশতা রেস্টুরেন্টের সামনে এক প্রেস ব্রিফিং করেন। সেখানে তিনি বলেন, তাকে গ্রেফতারের পর পুলিশ তার সঙ্গে মানবিক আচরণ করেনি। তিনি এক গ্লাস পানি চাইলেও পুলিশ তাকে এক ঘণ্টা পর পানি দেয়। তিনি পুলিশকে বলেছেন নয় মাসের অন্তঃসত্বা এবং অসুস্থ্য প্রচণ্ড গরমে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। তখন পুলিশ তাকে বলছিল এভাবে যেতে হবে। তারপরও তার প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়। বিমান বন্দরে কারও সাথে কথা পর্যন্ত বলতে দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ফেসবুক লাইভে তিনি পুলিশ প্রশাসন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি একজন ব্যক্তিকে নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, পুলিশ তার সঙ্গে যে আচরণ করেছে তার স্বামী দেশে আসলে তার সঙ্গে আরো বেশি খারাপ আচরণ ও হয়রানি করা হতে পারে। ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলার কারণে তিনি ক্ষমা চেয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ থেকে সরে যাননি। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তিনি এসব ঘটনার বিচার দাবি করেন। তিনি দাবি করেন অন্যায়ভাবে তাদের গাড়ির শোরুমে হামলা ও ভাঙচুর করা হলো অথচ পুলিশ উল্টো আমাদের এবং আমাদের কর্মচারিদের নামে মামলা দিয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। তবে তিনি কারা কর্তৃপক্ষ ধন্যবাদ জানান। কারাকর্তৃপক্ষ তাকে অনেক সম্মান দেখিয়ে মানবিক আচরণ করেছেন বলেও জানান।
রকিব সরকারের পুরাতন তিন মামলা সচল হচ্ছে
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রকিব সরকারের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। মামলা গুলির ঘটনা সত্য কিন্তু ওইসব মামলার স্বাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়া সে সব মামলা পুলিশ ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছিল। পুলিশ যেকোন সময় মামলাগুলি সচল করতে পারে স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে। আমরা মামলাগুলি খতিয়ে দেখছি। মামলা গুলির কিছু স্বাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। মামলা গুলি হচ্ছে- জয়দেবপুর থানার মামলা নম্বর ৭১, তারিখ ১২-১০-২০১৭, জয়দেবপুর থানার মামলা নম্বর ৫৯, তারিখঃ ০১-১০-২০১৭ ও জয়দেবপুর থানার মামলা নম্বর ১৪৭, তারিখঃ ২৭-০৪-২০১৭।