নির্যাতন বা ধর্ষণের শিকার কেউ আইনের আশ্রয় নিতে গেলে তাকে হয়রানি না করে সর্বোচ্চ সহযোগিতার দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটি। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সভায় এই দাবি জানানো হয়। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি করতে হবে। ভুক্তভোগী বা তার পরিবার মামলা করতে গেলে দোষারোপ না করে মামলা গ্রহণ এবং দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে হবে। আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় বক্তারা জানান, গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দেশে ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে ৫৭২ শিশু। তাদের মধ্যে একজন ছেলে শিশুও রয়েছে। ধর্ষণের পর এই শিশুদের মধ্যে ২৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ৩ ছেলে শিশুসহ মোট ৭৫ জন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এ সংখ্যা নির্ণয় করা হয়েছে।
আরও বলা হয়, শতকরা ৭৫ ভাগ শিশু যৌন হয়রানির ঘটনাই ঘটে পরিবারের ঘনিষ্ঠজন, বন্ধু বা আত্মীয়দের মাধ্যমে। এ ঘটনাগুলোর বেশিরভাগ বাড়িতে, আত্মীয় বা পারিবারিক বন্ধুদের বাড়িতে, স্কুলে বা স্কুলে যাওয়ার পথে এবং পরিচিত পরিবেশে ঘটছে। সাধারণত নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হয় বেশি। কারণ তাদের পারিবারিক সুরক্ষা নেই অথবা সুরক্ষা বিষয়ে তাদের ধারণাও তেমন একটা নেই। এ ছাড়া ভয় দেখিয়েও শিশুদের চুপ করিয়ে রাখা যায়। অভিভাবকরাও পারিবারিক সম্মানের কথা ভেবে শিশুদের চুপ করিয়ে রাখেন। তাই শিশু যৌন নির্যাতন বা ধর্ষণের ঘটনা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে, অন্যথায় এ ধরনের অপরাধ কমানো সম্ভব হবে না।
আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির সভাপ্রধান শামীমা আক্তারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ বেগম।
ফেরদৌস আরা রুমীর সঞ্চালনায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কমিটির সদস্য তামান্না রহমান। আরও বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য মাহবুব আলম ফিরোজ, ঢাকা জেলা কমিটির সম্পাদক সৈয়দা শামীমা সুলতানা, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি বদরুল, ইক্যুইটিবিডির মোস্তফা কামাল আকন্দ প্রমুখ।