সহযোগী রতনের নামে মামলা
পিকে হালদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনাসংক্রান্ত রুলের শুনানির জন্য আগামী ১২ জুন দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শুনানিকালে হাইকোর্ট বলেন, আমাদের বিভিন্ন আদেশের কারণেই পিকে হালদার আজ সারাবিশ্বে অন্যভাবে আলোচিত। অর্থপাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত। আমরা এমন আদেশ দেব, পিকে হালদার ও অন্যান্য অর্থপাচারকারী পৃথিবীর কোথাও শান্তিতে থাকতে পারবে না।’
আদালত রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা শুধু নির্দিষ্ট করে জানান যে, অর্থপাচারকারীরা কোথায় আছেন, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেব।’
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কেএম আমিন উদ্দিন। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আদেশের বিষয়টি একেএম আমিন উদ্দিন মানিক নিশ্চিত করেন।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে পিকে হালদারের বিদেশ পালানোর পর ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি দুদক তার বিরুদ্ধে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগে
মামলা করে। তার বিরুদ্ধে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এক আদেশে প্রশান্ত কুমার হালদারসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এর আগেই তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যান।
এর পর ‘পিকে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শীর্ষক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর তাকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেপ্তারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে দেশে ফেরাতে পদক্ষেপ নেওয়ার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, দুদক থেকে পাঠানো নিষেধাজ্ঞা জারির আদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশের পক্ষ থেকে জারির প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর বিকাল ৩টা ৩৮ মিনিটে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পিকে হালদার দেশত্যাগ করেন। সর্বশেষ গত বছরের ৮ জানুয়ারি পিকে হালদারকে গ্রেপ্তারে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল।
রতনের নামে মামলা : পিকে হালদারের সহযোগী রতন কুমার বিশ^াসের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক। গতকাল কমিশনের উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এ মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল রতন কুমারকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি নির্ধারিত সময়ে সম্পদের হিসাব দাখিল করেননি। এ ছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ২৬৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।