রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়ছে। ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে জালিয়াতি চক্রের বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে। এ চক্রের সদস্যরা প্রক্সি ও ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে অসদুপায়ে ভর্তিচ্ছুদের পরীক্ষায় চান্স পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে। এ সিন্ডিকেটে জড়িত থাকেন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।
গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সময় প্রক্সি দিতে আসা চার জনকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্র্যামমাণ আদালত। তবে তাদের মধ্যে বায়োজিদ খান নামে একজন প্রক্সিদাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদের (তন্ময়) নাম স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদেরও একটি ভিডিও ক্লিপ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, তন্ময়ের নির্দেশে বায়োজিদ প্রক্সি দিতে আসেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানান। প্রক্সি দেওয়ার আগে বায়োজিদ তার মোবাইল নম্বর তন্ময়ের কাছে জমা রেখেছেন। তন্ময় শাহ মখ্দুম হলের দ্বিতীয় তলায় থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রক্সির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত বায়োজিদ ও তন্ময় দুইজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। এর আগেও, তাদের নামে ভর্তি বাণিজ্য, সিট বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়।
ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতারা জানান, তন্ময় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে খুব একটা সক্রিয় নন। তবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি ও মাদক ব্যবসায় বেশ সক্রিয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, প্রক্সি জালিয়াতিতে ধরা পড়া বায়েজিদ একেক সময় একেক নাম বলেছেন। একাধিক নাম এসেছে। সেখানে মুশফিক তাহমিদের নামও বলেছেন। এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত করে দেখবে। তারা এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করবেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদ তন্ময়কে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। এ নিয়ে আমি আমার সভাপতির সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিবো এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে অবহিত করব।’