কিশোরীকে মন্দিরে ডেকে যৌন নিপীড়নের চেষ্টার অভিযোগে অবশেষে আদালতের নির্দেশে পীরগঞ্জে এক মন্দির কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার ২১ দিন পর গত ৩ আগস্ট থানায় মামলা রুজু করা হলেও আসামি প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে থানাপুলিশ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, পীরগঞ্জ পৌর শহরের মিত্রবাটি শ্রী শ্রী জগন্নাথ ধাম হরিবাসর মন্দির প্রাঙ্গণে গত ১২ জুলাই বেলা ১১টার দিকে একই এলাকার দুই কিশোরী খেলা করছিল। এ সময় মন্দির কমিটির সভাপতি বিনদ চন্দ্র রায় তাদের মন্দির ঘরে ডেকে নেয়। এর পর এক কিশোরীকে কৌশলে পানি আনতে তার বাড়িতে পাঠায় মন্দির কমিটির সভাপতি। এ সময় অপর কিশোরীকে মন্দির ঘরে একাকী পেয়ে যৌন নিপেড়ণের চেষ্টা করে বিনদ চন্দ্র। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ওই কিশোরী চিৎকার করলে মন্দিরঘর থেকে পালিয়ে যায় বিনদ। এ ঘটনায় হরিবাসর মন্দির কমিটির অন্য সদস্যদের কাছে বিচার দেয় ওই কিশোরীর পরিবার; কিন্তু বিনদ চন্দ্র প্রভাবশালী হওয়ায় মন্দির কমিটির অন্য সদস্যদের কথা তেমন পাত্তা দেয়নি। আজ-কাল বলে কাল ক্ষেপণ করতে থাকেন। পরে গত ২১ জুলাই বাধ্য হয়েই থানায় মামলা করতে যান ওই কিশোরীর মা। পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন। পরে ২৭ জুলাই ঠাকুরগাঁও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিনদ চন্দ্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন কিশোরীর মা। আদালত ব্যবস্থা নিতে থানাপুলিশকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে গত ৩ আগস্ট থানায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
এদিকে মামলা দায়েরের পর থেকেই বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে একটি মহল। তারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে দেনদরবার করছেন। মামলাটি তুলে নিতে এরই মধ্যে মামলার বাদীপক্ষকে নানাভাবে প্রলোভনের পাশাপাশি হুমকি-ধমকিও দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মামলার বাদী ওই কিশোরীর মা বলেন, তারা গরিব লোক। বিনদ প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা আতঙ্কে দিন পার করছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পীরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক সফিকুল ইসলাম জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আসামি পলাতক রয়েছেন।