পাল্টা আক্রমণ করব কিনা তা সময়ই বলে দেবে
আওয়ামী লীগ পল্টনকে নয়, বিএনপির আগুন সন্ত্রাসকে ভয় পায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। কাদের বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ফখরুলের পছন্দ নয়। ধরা পড়ে গেছে। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করেন না; আপনারা আবারও প্রমাণ দিলেন। এ জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আপনাদের পছন্দ না। বলে কী, এখানে অঘটন ঘটবে, খাঁচার মধ্যে। এটা খাঁচা? বেগম জিয়া এখানে মিটিং করলেন কেন? ৩৫ হাজার বর্ঘফুটের পল্টন উনাদের জন্য নিরাপদ। কেন নিরাপদ তা আমরা জানি। অঘটন আর কেউ ঘটাবে না। আগুন-বোমা-লাঠি নিয়ে আসবেন, সে জন্য ওটা আপনাদের জন্য নিরাপদ। সেখানে একটা ঘর আছে তো, নিরাপদে থাকবে।’
বিএনপির সব সমাবেশই ফ্লপ হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লক্ষাধিক লোকের সমাবেশেও ভালো কাভারেজ দেওয়া হয় না। কিন্তু বিএনপির ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। তাই এ বৈষম্যের সুবিচার চাই।’
বিএনপির সমাবেশে পরিবহন বন্ধ না করতে পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন দাবি করে কাদের বলেন, ‘এখনই শুনলাম বিএনপির নেতাকর্মীরা বিছানা, বালিশ, কম্বল ও সঙ্গে মশার কয়েল নিয়ে তাঁবু পাতছে। এত আগে আসার কী দরকার? তত্ত্বাবধায়ক আর হবে না,
সংবিধান পরিবর্তনের সুযোগ নেই। আমি পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের অনুরোধ করেছি, তারা যেন গাড়ি বন্ধ না করে। তারাও বলেছে গাড়ি বন্ধ করবেন না। ছাত্রলীগের সঙ্গেও যেন কেনো কিছু না ঘটে সে জন্য তাদের সম্মেলন এগিয়ে আনা হয়েছে। ছাত্রলীগ আপনাদের ধারে কাছেও যাবে না।’
এর আগে এদিন বিকাল সাড়ে ৩টায় অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের সভাপত্বিতে এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। বিকাল সোয়া ৪টায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।
ছাত্রলীগ সভাপতি জয় তার বক্তব্যে বলেন, আজকের এ সম্মেলনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করছি। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব প্রত্যাশী ২৪৫ জন নেতা সিভি জমা দিয়েছেন। আমরা মনে করি সবাই নেতৃত্ব পাওয়ার যোগ্য। তবুও সবকিছু বিবেচনা করে যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। যারা আগামীর বাংলাদেশ গড়ার জন্য ও আগামীর নির্বাচন নিয়ে কাজ করবে।
পাল্টা আক্রমণ করব কিনা তা সময়ই বলে দেবে
সমাবেশের নামে বিএনপি যদি কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে তা হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সমুচিত জবাব দেবে বলে জানিয়েছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সমাবেশ করবেন সুশৃঙ্খলভাবে, মারামারি নয়। তবে আমাদের ওপর আক্রমণ হলে আমরাও পাল্টা আক্রমণ করব কিনা সেটা সময় বলে দেবে। গতকাল ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস মাঠে অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের বলেন, ২১ আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা ও আইভি রহমানসহ ২৩ জনের প্রাণহানির ঘটনার প্রধান নায়ক হলেন তারেক রহমান। আর তারেক রহমান লন্ডন থেকে রাজপথ দখলের হুংকার দিচ্ছেন। ১০ তারিখের অনেক আগেই পল্টনে তাঁবু টানাচ্ছে বিএনপি, হাঁড়ি-পাতিল আনছে। তিনি বলেন, কোথা থেকে টাকা আসছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হুংকার ছুড়ে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি ও উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ময়মনসিংহ সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু, মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল, জুয়েল আরেং, কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনু, মনিরা সুলতানা মনি প্রমুখ।