দুই জেলায় গ্রেপ্তার ৭
গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী। উপজেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি আ. কুদ্দুস খান মাখন (৬৫) নামের এক বিএনপি নেতা হাসপাতালের আইসিইউ বেডে চিকিৎসাধীন থেকেও নাশকতা মামলার এক নম্বর আসামি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া ‘গায়েবি’ মামলার আসামি করার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। গত ২৯ নভেম্বর যুবলীগ নেতা আ. খালেক বাদী হয়ে সাটুরিয়া থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মাসুদুর রহমান খান স্বপন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রেজাউল করিম ও শহিদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় আরেক বিস্ফোরক মামলায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরÑ
মানিকগঞ্জ : ভুক্তভোগী জানান, গত ২৫ নভেম্বর থেকে সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি আ. কুদ্দুস খান মাখন (৬৫) ঢাকার একটি আভিজাত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমনকি গত ২৭ নভেম্বর (রবিবার) রাতে তার বুকে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনের পর আইসিইউতে ছিলেন তিনি। হাসপাতালে অচেতন থেকেও নাশকতা মামলায় তিনি ১ নম্বর আসামি। প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সরকার জানান, আগামী ১০ তারিখের সমাবেশ বানচাল করতে মিথ্যা গায়েবি মামলায় নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে পুলিশ। সাটুরিয়াতে নাশকতার কোনো ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ রাষ্ট্রীয় বাহিনী হয়ে তারা একটি দলের পক্ষে কাজ করছে। প্রতি রাতেই বাড়ি বাড়ি হানা দিচ্ছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে শতাধিক নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সাটুরিয়া থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাস বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ২৮ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করে বিস্ফোরক আইনে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মানিকগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
সদরপুর (ফরিদপুর) : সদরপুর উপজেলার বিএনপির উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম কবির মোল্যাসহ ২১ নেতাকর্মী ও অজ্ঞাত ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিস্ফোরক ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গতকাল শনিবার পুলিশ বাদী হয়ে সদরপুর থানায় মামলা করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেনÑ তরিকুল ইসলাম কবির মোল্যা, শফিক, হাবিবুর ও রাসেল। তাদেররকে ঐদিনই কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী সদরপুর সরকারি কলেজগেট এলাকায় জড়ো হয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন আটকে রাখে। এ ছাড়া রাস্তার ওপরে টায়ারে আগুন দেয় ও বিভিন্ন দোকানপাটে হামলা চালায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বোমা নিক্ষেপ ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে। পুলিশও তাদেরকে পাল্টাধাওয়া দেয়। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাসসহ ৭ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্র, বিস্ফোরিত এবং অবিস্ফোরিত ককটেলের অংশবিশেষ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশের ৪ সদস্য অহত হয়। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী বদরুজ্জামান বদু সাংবাদিকদের বলেন, তরিকুল ইসলামকে আটকের পর এসব ঘটনা সাজিয়েছে পুলিশ। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে পুলিশ নাশকতা মামলার নাটক সাজিয়েছে।