advertisement
advertisement
advertisement

স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব, প্রতিশোধ নিতে বন্ধুকে অপহরণের পর হত্যা

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৭ পিএম | আপডেট: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৭ পিএম
বামে আটক ইউসুফ-অমি-হামিম ও বামে মৃত শাহিন মোল্লা
advertisement

সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার প্রতিশোধ নিতে ২ সহযোগীকে নিয়ে বন্ধুকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে রাখা হয়। এরপর ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নিহতের পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল।

অবশেষে হত্যাকাণ্ডের আটদিন পর গতকাল শুক্রবার রাতে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা। আটককের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকারীরা র‌্যাবের কাছে এ ঘটনার বর্ণনা দেন।

advertisement

আটকরা হলেন বরগুনার আমতলী থানার কালীপোড়া গ্রামের রুহুল আমিন মোল্লার ছেলে ইউসুফ মোল্লা, পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানার গন্ডামারি গ্রামের রকিবুল ইসলামের ছেলে নাজমুল ইসলাম অমি ও বানারীপাড়ার সোনাহার গ্রামের মিজান শিকদারের ছেলে হামিম শিকদার। তাদের মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানাধীন পশ্চিম ইছাকাঠি, কাশিপুর ও বাকেরগঞ্জ এলাকা থেকে আটক করা হয়।

আজ শনিবার দুপুরে বরিশাল নগরীর রূপাতলীস্থ র‌্যাব-৮ এর সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান র‌্যাব-৮ বরিশালের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহমুদুল হাসান। লিখিত বক্তব্যে আটকদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘অপহরণের পর হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দি করে রাখা ব্যবসায়ী শাহিন মোল্লা (৩৮) নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রূপাতলী এলাকার এমএ খালেক সড়কের বাসিন্দা এমদাদুল হক মোল্লার ছেলে।’

advertisement

র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানায়, একই এলাকায় বসবাসের কারণে ব্যবসায়ী শাহিন মোল্লার সঙ্গে আসামি ইউসুফ মোল্লার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে শাহীন আসামি ইউসুফের সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী স্বর্ণা বিশ্বাসকে কু-প্রস্তাব দেন। বিষয়টি জানতে পেরে ইউসুফ শাহিনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই মোতাবেক ইউসুফ তার বন্ধু নাজমুল ইসলাম অমি ও হামিম শিকদারকে নিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে কৌশলে শাহীনকে ডেকে নিয়ে যান। তখন তারা শাহীনকে রূপাতলীস্থ কাঠালতলার তালুকদার হাউজিংয়ের প্রথম গলির নাহার ভিলার চতুর্থ তলায় ইউসুফ মোল্লার ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। এরপর আসামিরা শাহীনের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরবর্তীকালে শাহীনের লাশ বস্তাবন্দি করে গুম করার জন্য বাথরুমের ফলস্ ছাদের উপরে রেখে ফলস্ ছাদের দরজা আঠা দিয়ে বন্ধ করে দেন।

এদিকে, শাহীন নিখোঁজের ঘটনায় গত ৩০ জানুয়ারি বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় তার স্বজনরা একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পাশাপাশি গত ৩১ জানুয়ারি শাহীনের বোন শিরিন আক্তার মুন্নি তার নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধান পেতে র‌্যাব-৮’র সহযোগিতা চেয়ে একটি আবেদন করেন। এরইমধ্যে বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে গত ২ ফেব্রুয়ারি আসামিরা শাহীনের পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।

এরপর র‌্যাব-৮’র সদস্যরা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে গতকাল শুক্রবার রাতভর অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করে। পাশাপাশি বস্তাবন্দি করে গুম করে রাখা শাহীনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আটক আসামিদের নামে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।