advertisement
advertisement
advertisement

ইবি রেজিস্ট্রারের গোপন লেনদেনের অডিও ফাঁস

ইবি প্রতিনিধি
১৫ মার্চ ২০২৩ ১২:৩৩ পিএম | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৩ ১২:৩৩ পিএম
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান
advertisement

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের(ইবি) সাবেক ডাইরেক্টর অব প্লানিং (পিডি) ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান ও মঈন নামে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির (সম্ভাব্য ঠিকাদার) কণ্ঠ সাদৃশ অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে সাথী খাতুন নামে একটি আইডি দিয়ে অডিওটি আপলোড করা হয়।

এসময় লেনদেন সংক্রান্ত একই অডিওতে পর পর চারটি ভিন্ন ভিন্ন সময় কথোপকথন শোনা যায়।অডিও টি চারটি সময়ের কথপোকথন একসঙ্গে সংযুক্ত করে ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের একটি অডিও প্রকাশ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

advertisement

অডিও এর প্রথম অংশে শোনা যায় মঈন নামের একজন বলেন, স্যার আসসালামু আলাইকুম স্যার। আমি মঈন বলছিলাম। স্যার আজকে তো ওইটা জমা দিয়ে দিলাম টাকা কোথায় কখন প্লেস করবো আপনাকে, বললে আমি ওইভাবে পিপারেশন নিতাম আরকি।

এসময় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান সাদৃশ কন্ঠে বলেন, আপনি তিনটার সময় কুষ্টিয়া এসে দিতে হবে। তখন মঈন বলেন, তিনটার সময় স্যার পারবো না। সাড়ে চারটার সময় পারবো। আলী হাসান বলেন, সাড়ে চারটার সময়ই দিয়েন। মঈন, জ্বী স্যার সাড়ে চারটার সময় পাবো। চার লাখ টাকা পারবো আপনার টোটাল টাকাটাই পাবো কিন্তু আপনার চার লাখ টাকা সাড়ে চারটা থেকে পাবো পাঁচটা সাড়ে পাঁচটার ভেতর মধ্যে দিয়ে দিব।

advertisement

আলী হাসান, ফোনে এগুলো বলা দরকার নাই। মঈন, আমি সেইফ জায়গায় আছি। আলী হাসান, না না ফোনে এগুলো বলার দরকার নেই। মঈন, ওহ আচ্ছা, আচ্ছা ঠিক আছে। আলী হাসান বলেন, আমি শুধু ফোনে বলে দিব কোন জায়গা। মঈন,ওকে ধন্যবাদ স্যার।

অডিওর দ্বিতীয় অংশে রেজিস্ট্রার আলী হাসান বলেন, কে বলছেন? বিপরীতপক্ষ থেকে বলেন, মঈন সাহেব বলছিলাম, আপনি কে বলছিলেন?

আলী হাসান, আমি ডাইরেক্টর প্লানিং বলছিলাম। মঈন, ও আচ্ছা স্যার। ওইটা সাড়ে চারটার দিকে পাবেন। আলী হাসান, আচ্ছা ঠিক আছে। ওইটা একটু দেখেশুনে বলবেন। মঈন, না স্যার বলবোনা। আামি শুধু ইঙ্গিত দিব আপনাকে। যে আমার হয়ে গেছে আমি কোথায় আসবো। আলী হাসান, আচ্ছা ঠিক আছে।

অডিওর তৃতীয়  অংশে রেজিস্ট্রার আলী হাসান মঈনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হয়েছে? মঈন, না এখনো হয়নি স্যার, বসে আছি ব্যাংকে। কনফার্মেশনের জন্য বসে আছি ঢাকার। এ সময় আলী হাসান বলেন, আচ্ছা, আমি আছি শহরের ভেতরেই আছি।

অডিওর চতুর্থ অংশে মঈন বলে, আস্সালামুআলাইকুম স্যার। আলী হাসান, কি অবস্থা? মঈন, স্যার একটু অপেক্ষা করতে হবে স্যার একটু অপেক্ষা। কোথাও বসে চা টা খান। আলী হাসান, কতক্ষণ লাগবে আর? মঈন, লাগবে আধা ঘন্টা লাগবে স্যার। আলী হাসান, কত কত? মঈন বলেন, ঢাকা থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়েছে স্যার। আলী হাসান, আরে বাবা এদিকে ব্যাংক বন্ধ করে দিব তো। মঈন, আরে বইলেন না। ঢাকা থেকে আবার ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়েছে। কিভাবে যে করেছি আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আপনি অল্প একটু অপেক্ষা করেন স্যার। একটু অপেক্ষা করেন আসতিছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এমদাদুল আলম বলেন, বিষয়টা নিয়ে আমরা খুবই বিব্রত। আমরা প্রাথমিকভাবে তার কন্ঠ সাদৃশ্য পেয়েছি। কর্মকর্তা সমিতির একটি জরুরী মিটিং ডেকেছি, মিটিংয়ে যে সিদ্ধান্ত হবে সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা উপাচার্যের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করব। 

এই বিষয়ে কর্মকর্তা সমিতি বিতর্কিত হয়ে গেল বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, 'আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত না। এমন ঘটনা ঘটলে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারি। দেখি এ বিষয়ে দেখি কি করা যায়।

প্রসঙ্গত, এর আগে সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের কন্ঠ সদৃশ একাধিক অডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এছাড়াও এসকল ঘটনায় জড়িত নেপথ্যের মানুষদের খুজতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।