advertisement
advertisement
advertisement

‘মাকে জানিয়ে দাও, আমি বেঁচে আছি’

প্রবাস ডেস্ক
১৭ মার্চ ২০২৩ ০৬:৩৭ পিএম | আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩ ১২:০২ এএম
সাইফুলসহ ১৭জনকে ইতালির সিসিলিতে নিয়ে আসা হয়েছে | ছবি: সংগৃহীত
advertisement

ইউরোপে যাওয়ার পথে লিবিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনা ৩০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এ ঘটনায় ১৭ জনকে উদ্ধার করেছে ইটালি সরকার। উদ্ধার হওয়া সকলেই বাংলাদেশি। নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে ফেরা এক বাংলাদেশির নাম সাইফুল ইসলাম। ইতালিয় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমার মাকে জানিয়ে দাও, আমি বেঁচে আছি।’

৩৩ বছর বয়সি সাইফুল বাবা-মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড়। ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় উদ্ধার হওয়া ১৭ জনের মধ্যে তিনি একজন। ইটালির গণমাধ্যমকে তিনি আরও বলেন, ‘আমি শেষ অবধি তীরে পৌঁছাতে পেরেছি। কিন্তু আমার সঙ্গে যাত্রা শুরু করা অনেককেই চোখের সামনে ডুবে যেতে দেখেছি।’

advertisement

অ্যালার্ম ফোন নামের একটি সংস্থা সেই নৌকা দুর্ঘটনার খবর প্রথমে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল, যাতে তাদের উদ্ধার করা হয়। কিন্তু ইটালি কর্তৃপক্ষ সময়মতো তাতে সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। একপর্যায়ে অবশ্য একটি বাণিজ্যিক জাহাজের মাধ্যমে অভিবাসীদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ১৭ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও সেখান থেকে ৩০ জন নিখোঁজ হয়েছেন বলে স্বীকার করেছে ইটালি কর্তৃপক্ষ।

উদ্ধার করার পর সাইফুলসহ বাকিদের সিসিলির রাগুসা রাজ্যের পোৎসাল্লো দ্বীপে নিয়ে আসা হয়। তাদের বহনকারী নৌকাটি উল্টে গেলে তিনি সেটার উপরে উঠতে গিয়ে ডান পায়ে আঘাত পেয়েছেন। সিসিলিতে পৌঁছানোর পর তাকে একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

advertisement

নৌকা ডুবির ঘটনা পরিষ্কারই মনে আছে সাইফুলের। সেই ঘটনার আতঙ্ক সাইফুলের চোখে মুখে স্পষ্ট৷ তিনি বলেন, ‘লিবীয় উপকূল থেকে যাত্রা শুরুর কয়েকঘণ্টা পর সাগর ক্রমশ রুক্ষ হতে শুরু করে। তখন কেউ কেউ ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। এ সময় আমরা নৌকায় একত্রিত হয়ে বসেছিলাম। কিন্তু ঠাণ্ডা বেশি হওয়ায় এবং ঢেউয়ের কারণে একপর্যায়ে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছিলাম।’

মানবপাচারকারীরা আমাদের নৌকায় তোলার সময় বলেছিল নৌকায় পানি ও খাবার আছে। কিন্তু সেটা মিথ্যা কথা ছিল।

সাইফুলরা দুর্ঘটনায় পড়ার পর মোবাইলে নানা স্থানে অ্যালার্ম পাঠিয়েছিলেন। তাদের আশা ছিল কেউ না কেউ তাদের উদ্ধার করতে আসবে। একপর্যায়ে একটি জাহাজ তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে।

ইটালি প্রবেশের আশায় বাংলাদেশ থেকে প্রথমে লিবিয়ায় আসেন সাইফুল। এ জন্য মানবপাচারকারীদের কয়েক লাখ টাকা দিয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরে এই টাকা জমিয়েছিলেন সাইফুল। তিনি বলেন, ‘আমি কাঠমিস্ত্রি ছিলাম। কিন্তু আমি সবসময় ইটালিতে আসার স্বপ্ন দেখেছি। এখন আমার একমাত্র আশা হচ্ছে আমি পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চাই।’