advertisement
advertisement
advertisement

ছেলের অভিযোগ
এমপির হুকুমেই চেয়ারম্যানের ওপর হামলা

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
১৯ মার্চ ২০২৩ ১২:০০ এএম | আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩ ১১:৪৭ পিএম
advertisement

পটুয়াখালীর বাউফলে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালের হাওলাদারের ওপর হামলার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার ছেলে মো. মাহমুদ হাসান। এতে তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের নেতৃত্বে ও হুকুমে সন্ত্রাসী বাহিনী তার বাবার ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।

গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বগা বন্দরের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন মো. মাহমুদ হাসান।

advertisement

তিনি বগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বাবা মোতালেব হাওলাদার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাহমুদ হাসান অভিযোগ করেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে তার বাবা মোতালেব হাওলাদারের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় জনতা ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার উদ্দেশ্যে আনন্দ র‌্যালি বের করেন। র‌্যালিটি সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে পৌঁছালে সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের উপস্থিতিতে, নেতৃত্বে ও হুকুমে সন্ত্রাসী বাহিনী তার বাবার ওপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তার বাবার ডান পা ভেঙে যায়, কোপের আঘাতে তার ফুসফুসের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ও ডান হাতের তৃতীয় আঙুল কেটে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে থাকে। তিনি এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

advertisement

মাহমুদ এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে পুলিশের কাজে বাধা ও পুলিশ আহত হওয়ার অভিযোগে কারও নাম উল্লেখ না করে ২৫০-৩০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনির হোসেন বাদী হয়ে গত শুক্রবার গভীর রাতে একটি মামলা করেন।

জানা যায়, বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের চারটি পক্ষ একই দিনে একই সময়ে কর্মসূচির ডাক দেয়। এ কর্মসূচি ঘিরে শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে আওয়ামী লীগের তিনটি পক্ষের নেতাকর্মীদের উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে দেখা যায়। আ স ম ফিরোজের পক্ষের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদারের পক্ষের নেতাকর্মীরা বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হন এবং বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েলের পক্ষের নেতাকর্মীরা সরকারি কলেজ মাঠে জড়ো হন।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, মোতালেবের নেতৃত্বে বেলা ১১টার দিকে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে আনন্দ র‌্যালিটি বের হয়ে দলীয় কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছালে সংঘর্ষ এড়াতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল আমিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এতে বাধা দেন। তখন পুলিশ ও আবদুল মোতালেব হাওলাদারের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। আর অপর পাশেই লাঠিসোটা ও বগিদা নিয়ে অবস্থান করছিলেন আ স ম ফিরোজের কর্মী-সমর্থকরা। তখন দুপক্ষের কর্মী-সমর্থকরাই দলীয় ও নিজ নিজ নেতার নামে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে দলীয় কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে পুলিশসহ কমপক্ষে অর্ধশত আহত হন। একপর্যায়ে আবদুল মোতালেবের ওপর হামলা চালায় এমপি ফিরোজের লোকজন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। তিনি বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিউতে আছেন বলে তার মেয়ে মোসা. রেশমা জানিয়েছেন।