advertisement
advertisement
advertisement.

জাবিতে ছাত্রলীগের অস্ত্রের মহড়া

জাবি প্রতিনিধি
২৩ মার্চ ২০২৩ ০৬:০৯ পিএম | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৩ ০৬:১৭ পিএম
গতকাল রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্রের মহড়া দেয় একদল নেতাকর্মী
advertisement..

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারধর ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মীর মশাররফ হোসেন হল ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ছাত্রলীগের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল বুধবার রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় খবর সংগ্রহ করতে গেলে দুই সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার দুপুরে বটতলায় মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আহমেদ গালিবকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের কিছু শিক্ষার্থী মারধর করে। পূর্ব বিরোধের জেরে মারধরের ওই ঘটনায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগ নেতাদের নির্দেশে একদল শিক্ষার্থী রামদা, লোহার পাইপ, কাঁচের বোতল, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হল থেকে মহড়া দিয়ে বটতলা এলাকায় আসে।

advertisement

এদিকে, মহড়ার খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় আগে থেকেই অবস্থান নেয় প্রক্টরিয়াল টিম। শিক্ষার্থীরা বটতলার ভাসানী চত্বরে এসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রক্টরিয়াল টিম তাদের বাধা দেয়। সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী বাগবিতণ্ডা হয়। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন।

এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বাংলাদেশ টুডের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি জুবায়ের আহমেদ ও ডিবিসি নিউজের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুনের ওপর চড়াও হয়ে মারধরের চেষ্টা করেন হল ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী। এ সময় বিক্ষিপ্তভাবে হামলা করে জুবায়ের আহমেদের গায়ের জামা ছিঁড়ে ফেলে।  

এ সময় শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের শিক্ষার্থী ও প্রক্টরকে উদ্দেশ করে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় স্লোগান ও গালাগাল দিতে থাকে। ঘটনাস্থলে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাসান মাহমুদ ফরিদ (পরিবেশ বিজ্ঞান-৪৪), সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরান (ইতিহাস-৪৪), সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ (মার্কেটিং-৪৪), সহ-সভাপতি সজীব হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বিপ্লব হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেলিন মাহবুব উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘ছাত্রলীগের কেউ দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসে দেশীয় অস্ত্র থাকলে নিরাপত্তার শঙ্কা তৈরি হয়। আমরা এসবের বিরুদ্ধে রয়েছি। এক্ষেত্রে হল থেকে এসব নির্মূলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করব’।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘আমরা সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা জানতাম না, জানলে এখানে আসতামও না। এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘আজকের ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত। আমরা এই ধরনের ঘটনাগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখে তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেই। আজকের ঘটনার এক্ষেত্রেও সেটিই করা হবে। এর বাইরে কোনও অভিযোগ পেলে সেগুলোও খতিয়ে দেখা হবে।’

এর আগে, গত রোববার সাভারের একটি রেস্টুরেন্টে বসাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আইবিএ ৪৭ ব্যাচের ও রবীন্দ্রনাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমানকে মারধর করে মীর মশাররফ হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ ঘটনায় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ গালিব, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তানভীর ইসলাম, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাব্বির হাসান সাগর ও খালিদ হাসানসহ অজ্ঞাত ৪০ জনের বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী।