‘সবাই ভালো থেকো, আমিও ভালো থাকব ওপারে।’ নিজের ফেসবুক আইডিতে এমন পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেছে রনজু আহমেদ নামের এক স্কুলছাত্র। মৃত্যুর আগে ফেসবুকে এ ধরনের আরও কয়েকটি স্টাটাস দিয়েছে সে।
স্থানীয়রা বলছেন, ‘প্রেমে ব্যর্থ’ হয়ে গতকাল রোববার দিবাগত রাতে নিজ ঘরে ফ্যানের সঙ্গে রশিতে ঝুলে সে আত্মহত্যা করেছে।
রনজু আহমেদের বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের কাছিকাটা বিলবিয়াসপুর গ্রামে। তার বাবার নাম হরফ আলী। সে উপজেলার কাছিকাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণিতে পড়ত।
স্থানীয় ও স্বজনরা জানান, গতকাল দিবাগত রাত ১টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে লাইভ চালু করে রনজু লাইভের শিরোনাম দেন, ‘হেরে গেছি, বিদায় ভালো থেক তুমি, এ পৃথিবী।’
তারপর সে গলায় রশি পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে পড়ে। লাইভ চলার প্রায় ৯ মিনিটের মাথায় পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি বুঝতে পেরে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় রনজুকে রশিতে ঝুলতে দেখে দ্রুত নামানো হয়। কিন্তু ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়েছে।
আত্মহত্যার আগে রনজু তার ফেসবুক আইডিতে কয়েকটি স্ট্যাটাস দেন। একটি স্ট্যাটাসে সে লেখে, ‘সরি বাবা, কত কষ্ট দিয়েছি আপনাকে, হয়তো আমাকে নিয়ে আপনার অনেক স্বপ্ন ছিল।’
আরেকটি স্ট্যাটাসে মৃত্যু হ্যাস ট্যাগ দিয়ে লেখে, ‘শেষ আয়োজন! এবং শেষ ঠিকানা! কখন জানি মৃত্যু এসে বলবে, চলো এবার যাওয়া যাক, জিন্দা থাকলে নিন্দা তো হবেই, সাদা কাপর জড়িয়ে গেলে ভালোবাসার মানুষের অভাব হয় না।’
আরও লেখে, ‘সময় যখন থমকে যাবে, শেষ হবে সফর।’
রনজুর চাচাতো ভাই সোহেল রানা বলেন, ‘রনজু খুবই ভালো ছেলে ছিল। এলাকার ছোট, বড় সবার সাঙ্গে মিল ছিল তার। সে এভাবে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যাবে, আমরা কেউ বুঝতেই পারিনি।’
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘কী কারণে ওই ছাত্র আত্মহত্যা করেছে, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে তার কক্ষ থেকে প্রেমপত্র ও ডায়েরি পাওয়া গেছে। ডায়েরির ভেতর রক্তমাখা শুকনো গোলাপ ফুল পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।’