advertisement
advertisement
advertisement.

কথা কাটাকাটির জেরে জবি ছাত্রীকে নির্যাতন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
১৭ মে ২০২৩ ১০:৪৮ পিএম | আপডেট: ১৭ মে ২০২৩ ১০:৪৮ পিএম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হল। ফাইল ছবি
advertisement..

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলে এক আবাসিক ছাত্রীকে তিন ঘণ্টা ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই হলের একাধিক ছাত্রীর বিরুদ্ধে। নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের হাফসা বিনতে নূর।  এ ঘটনার পর আজ বুধবার হল প্রভোস্টের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র দেন তিনি।  

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিজেদের রুমের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাফসা বিনতে নূরের সঙ্গে জুনিয়র রুমমেট রেবেকা খাতুনের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রেবেকা খাতুন হলের অন্য রুমের মেয়েদের নিয়ে এসে রুম আটকে হাফসাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন ও হেনস্তা করেন। প্রায় তিন ঘণ্টা যাবৎ হেনস্তার পর হাফসা বিনতে নূর অজ্ঞান হয়ে যান।

advertisement

অভিযুক্ত ছাত্রীরা হলেন তন্বী, ইশিতা, ফাল্গুনী আক্তার, নিনজা শিকদার , ইরা ও নাজমুন নাহার স্বর্ণা। জানা যায় অভিযুক্ত ছাত্রীরা জবি শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের এক ছাত্রী বলেন, ‘আমার রুম পাশে হওয়ায় আমি এসে হাফসাকে রুম থেকে বের করে নিয়ে যেতে চেয়েছি। কিন্তু রেবেকা, নিনজা, ফাল্গুনীসহ সবাই তাকে ঘেরাও দিয়ে ধরে যেন সে আসতে না পারে। একপর্যায়ে সে মোবাইল নিতে গেলেও তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মোবাইল আনতে দেয়নি।’

এ বিষয়ে অভিযোগকারী হাফসা বলেন, ‘এটা আমাদের রুমের অভ্যন্তরীণ ঘটনা। কিন্তু আমাদের দুই ব্যাচ জুনিয়র বোটানি বিভাগের রেবেকা খাতুন হলের অন্য রুমের ৭-৮ জন মেয়েকে নিয়ে আমাদের রুমে এসে আমাকে শারীরিক মানসিক ভাবে লাঞ্চিত ও মারধর করে। তারা সবাই মিলে রাত সাড়ে আটটা থেকে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত আমার ওপর এ মানসিক নিপীড়ন চালায়। নিনজা শিকদার নামের এক মেয়ে এ পুরো ঘটনা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।’

বিষয়টি সম্পর্কে অভিযুক্ত নাজমুন নাহার স্বর্ণার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি ম্যামকে সঙ্গে নিয়ে ওদের রুমে যাই। আমি গিয়ে ওদের শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু হাফসা আপুকে মারধরের বিষয় আমি কিছু জানি না। একপর্যায়ে আমি ওদের রুমে ম্যামকে রেখে নিচে চলে আসি। তারপর নাকি হাফসা আপু আমাদের ছাত্রলীগের মেয়েদের গাঁয়ে হাত দেয়।’

ঘটনার সময় উপস্থিত থাকা হলের আবাসিক শিক্ষক মানসুরা বেগম বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনার জেরে আবেগের বশবর্তী হয়ে এ কলহের সূত্রপাত ঘটে। অবস্থা বেগতিক জেনে আমি সেখানে উপস্থিত হই। আমি যাওয়ার পরও তারা আক্রমণাত্মক ছিল। হাফসাকে তারা রুমের বাইরে যেতে ও ফোনটাও ধরতে দিতেছিল না। মূলত অন্য রুমের মেয়েদের নিয়ে আসার কারণেই এ ঘটনা এতদূর পর্যন্ত গড়ায়। আমি সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করার পরও তারা আমার সামনে বসেই আরও উত্তেজিত হয়ে যায়।’

এ ঘটনার বিষয় হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, ‘হলে বেশ কিছুদিন যাবৎ এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের নানান ঘটনায় আমি শঙ্কিত। আজ অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা আলোচনায় বসেছি। তারপর দু-পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি। এরপর থেকে যদি কেউ এরকম কাজের সঙ্গে জড়িত হয়, তাহলে তার সিট বাতিল হবে।’