সিটি করপোরেশনের গাড়িতে দুই মৃত্যু
নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে চাপা দেওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লার গাড়ির ‘মূল চালক’ হারুন অর রশীদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
গত বুধবার কলেজে যাওয়ার পথে গুলিস্তানে ডিএসসিসির ময়লার গাড়ির চাপায় নিহত হন নাঈম হাসান। এ ঘটনার পর জড়িতদের শাস্তি ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে সড়কে নামেন রাজধানীর হাজার হাজার শিক্ষার্থী।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, হারুন ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তিনি চালক ইরানের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ট্রাকটি নিজের নামে বরাদ্দ নেন। ময়লার গাড়ির জন্য প্রতিদিন বরাদ্দকৃত ১১ লিটার তেলের ছয় লিটার চুরি করে বিক্রি করে দেওয়া হতো। এভাবে হারুন প্রতি মাসে ১৮০ লিটার তেল চুরি করে বিক্রি করে দিতেন।
গতকাল র্যাব এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ২০২০ সাল থেকে হারুন ময়লাবাহী এই গাড়িটি নিয়মিতভাবে চালাতেন। ঘটনার দিন হারুনের অনুপস্থিতিতে তার সহকারী মো. রাসেল গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। হারুন ও রাসেল, দুজনেরই কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।
গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের বাবা পল্টন থানায় মামলা করেছেন। এই মামলায় রাসেল তিন দিনের রিমান্ডে আছেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় গাড়িতে থাকা দুই পরিচ্ছন্নতাকর্মী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
নাঈমের মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে ডিএসসিসির এক দাপ্তরিক আদেশে হারুন মিয়ার পাশাপাশি ইরান মিয়াকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কর্মচ্যুত করা হয় আরেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী আবদুর রাজ্জাককে।
আহসানকে চাপা দেওয়া চালকও গ্রেপ্তার : এদিকে নাঈম নিহতের পরদিন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লার গাড়ির চাপায় গণমাধ্যমকর্মী আহসান কবীরের মৃত্যুর ঘটনায় চালক মো. হানিফকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল শুক্রবার রাতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আজ কারওয়ানবাজারের র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে।
গত বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্সের উল্টো দিকে ডিএনসিসির ময়লার গাড়ির চাপায় প্রাণ হারান আহসান কবীর খান। তিনি দৈনিক সংবাদের কম্পিউটার বিভাগে কর্মরত ছিলেন।