সিলেট অঞ্চলে বিলুপ্তপ্রায় সিলেটী ভাষার বর্ণমালা ‘নাগরি লিপি’। এ লিপি পুনরুদ্ধারের পশাপাশি নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের কাছে এর গুরুত্ব তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নাগরি লিপিকে রক্ষা ও নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করার উদ্যোগ নিয়েছে মাস্টারপিস বাংলাদেশ। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তত্ত্বাবধানে পাঁচ মাস মেয়াদি এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। সিলেট বিভাগের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে চৌদ্দ শতকের শুরুর দিকে স্বতন্ত্র এ লিপি উদ্ভবের পর রচিত হয়েছে দুই শতাধিক গল্পগ্রন্থ, যার মধ্যে রয়েছে মূল্যবান পুঁথি সাহিত্য, কবিতা ও গান।
সামাজিক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গ্রহণ করা এ প্রকল্পে সিলেটী ভাষা ও ‘নাগরি লিপি’ ছাড়াও মনিপুরী ও খাসিয়া ভাষার সচেতনতা নিয়েও কাজ করেছেন উদ্যোক্তারা। সিলেটী নাগরি লিপি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই শেষে সিলেটের বেশ কয়েকটি কলেজের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের শুরু থেকেই প্রকল্পে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। কয়েকটি ধাপে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের মধ্যে থেকে ২০ শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণ করেন। নাগরি ভাষার প্রতি উৎসাহ বাড়াতে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সনদ ও প্রাইজমানি প্রদান করা হয়।
মাস্টারপিস বাংলাদেশ ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে ৫ মাসব্যাপী এ প্রশিক্ষণের সমাপনী এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় নগরীর মুসলিম সাহিত্য সংসদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. আবদুস শুকুরের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আনোয়ারুল ইসলাম।
প্রকল্পের সমন্বয়ক ও মাস্টারপিস বাংলাদেশের সহযোগী সমন্বয়ক জামিল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আশরাফুল করিম, সহযোগী অধ্যাপক ড. মস্তাবুর রহমান, নাগরি গবেষক ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষক জেমস লয়েড উইলিয়ামস, নাগরি গবেষক ও লন্ডন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. স্যু লয়েড উইলিয়ামস, বাংলাদেশ মনিপুরী সাহিত্য সংসদের সভাপতি একে শেরাম, পঞ্চখন্ড গোলাবিয়া পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক শাহেদ আহমদর প্রমুখ।