চিকিৎসক-নার্সসহ নানা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও বাড়েনি জনবল ও সেবার মান। উপজেলার ৩ লাখের অধিক মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও নার্স নিয়োগের দাবি উঠেছে। অভিযোগ আছে, দূর থেকে আসা রোগীরা প্রয়োজনীয় সেবা না পেয়ে ভোলা ও বরিশালের দিকে ছোটেন, বিশেষ করে হাসপাতালে গাইনি ও শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় সেবাবঞ্চিত রোগীরা। শিশু বা নারীদের জটিল কোনো সমস্যা দেখা দিলেই উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদরে বা বরিশাল রেফার করা হয়। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন দরিদ্র রোগীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৫০ শয্যার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ২১টি পদের মধ্যে কর্মরত ৯ জন। শূন্য রয়েছে ১০টি পদ। এর মধ্যে গুরুপ্তপূর্ণ মেডিসিন, গাইনি, শিশু, অর্থোপেডিকস, কার্ডিওলজিস্ট, চক্ষু ও অ্যানেসথেসিয়ার মতো চিকিৎসকের পদ শূন্য। হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্সদের ২০টি পদ থাকলেও কমরত আছেন মাত্র ১২ জন। শুধু তাই নয়, শূন্য রয়েছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেশ কয়েকটি পদ। এর মধ্যে ২টি ওয়ার্ড বয়, ২টি অফিস সহায়ক, একটি মালী ও ৪ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদ শূন্য। রয়েছে টেকনিশিয়ান সংকট।
হাসপাতালে এক্স-রে ও ইসিজি মেশিন থাকলেও টেকনিশিয়ানের অভাবে সেগুলোর ব্যবহার হচ্ছে না। এতে রোগীদের বাধ্য হয়েই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হচ্ছে বাইরের ডায়াগনস্টিক বা ক্লিনিক থেকে। এতে বাড়তি অর্থ গুনতে হয় তাদের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ বছর ধরে হাসপাতালে কোনো অপারেশন হচ্ছে না। সামান্য কাটা-ছেঁড়ার চিকিৎসা হলেও জটিল রোগীদের কোনো সেবা নেই হাসপাতালে। অ্যানেসথেসিয়াসিস্ট না থাকায় অপারেশন থিয়েটার বন্ধ। হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে আউটডোরে দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং ইনডোরে অন্তত ৩৫ জন ভর্তি হচ্ছেন। এসব রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসক-নার্সদের।
রোগীদের অভিযোগ, উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা ও বরিশাল যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. মহসিন খান বলেন, চিকিৎসক-নার্স সংকট দীর্ঘদিন থেকে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ শূন্য থাকায় আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আর টেকনিশিয়ান না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি চালু করা যাচ্ছে না।