হাজারও কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পিকে হালদার) ফেরত চেয়েছে বাংলাদেশ। ভারত আশ^াস দিয়েছে, তারা এ ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করবে। তবে ঠিক কবে নাগাদ তাকে দেশে ফেরানো যাবে, সে বিষয়ে ঢাকাকে এখনো কোনো বার্তা দেয়নি নয়াদিল্লি।
ভারত জানিয়েছে, বাংলাদেশের তথ্যের ভিত্তিতে পিকে হালদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া মেনে তাকে বাংলাদেশে পাঠাতে সময় লাগতে পারে।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অরিজিৎ চক্রবর্তী সাংবাদিকদের জানান, পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা হয়েছে। মামলা করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
এদিকে গতকাল পিকে হালদার ও তার
সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া চারজনকে আরও ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছেন ভারতের তদন্ত কর্মকর্তারা। গ্রেপ্তার হওয়া একমাত্র নারীকে পাঠানো হয়েছে বিচারিক হেফাজতে। এর আগে গ্রেপ্তারের পর পিকে হালদারকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় ইডি।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী গতকাল পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে তার দপ্তরে দেখা করেন। সেখানে পিকে হালদারকে ফেরতের বিষয়ে আলোচনা হয়। পরে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘দুদকের সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই পিকে হালদারকে ভারত গ্রেপ্তার করেছে। তাদেরও একটা আইনি প্রক্রিয়া আছে। সেই প্রক্রিয়ায় সব কিছু হবে। তারা বলেছে যে তাকে ফেরানোর বিষয়ে আমাদের সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবে। ভারত আইনি প্রক্রিয়া শেষে আমাদের অনুরোধ বিবেচনায় নেবে।’
ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে পিকে হালদারকে ফেরত চাওয়া হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ, সেগুলোর জন্য তাকে দেশে আনা প্রয়োজন। এ জন্য হাইকমিশনারকে সহযোগিতা করতে বলেছি। আনুষ্ঠানিক বলতে গেলে চিঠি দিয়ে চাওয়া বা মন্ত্রী পর্যায়ে চাওয়ার বিষয় হয়নি। যারা দেশ থেকে অর্থপাচার করে বিদেশে নিয়ে যান, তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না উল্লেখ করে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমরা সরকার থেকে যে বার্তা দিতে চাই, কোনো ধরনের অপরাধীকে আমরা প্রশ্রয় দেব না। সেটা ফিন্যানশিয়ালি ক্রাইম হোক বা অন্য কিছু। অপরাধী যতই শক্তিশালী হোক, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
অন্যদিকে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘পিকে হালদারকে বাংলাদেশে হস্তান্তরে সময় লাগতে পারে। কারণ এসব বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া মানা হয়।’ ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ অনুরোধ করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি কিন্তু বড়দিনের কার্ড বিনিময় নয়। আমি মনে করি, এ ধরনের বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। সেটি আস্তে আস্তে হতে দিন। এ নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি।’ পিকে হালদার বিষয়ক তথ্য বাংলাদেশ থেকে এসেছে বলেও জানান হাইকমিশনার।