অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। আমাদের পশ্চাৎপদ সমাজকে এগিয়ে নেওয়ার বাতিঘর। লেখক, প্রাবন্ধিক ও শিক্ষক হিসেবে তিনি সবার শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন। তার জন্ম মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগরে, ১৯৩৬ সালের ২৩ জুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৬ সালে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পাস
করে সে বছরই মুন্সীগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজে শিক্ষকতায় নিয়োজিত হন সিরাজুল ইসলাম। পাশাপাশি ঢাকার জগন্নাথ কলেজেও খ-কালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন প্রভাষক হিসেবে। পরবর্তীকালে যুক্তরাজ্যের লিডস ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্টগ্রাজুয়েট এবং লেজিস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি লাভ করেন। বিংশ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত তিনি ঢাবির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। পরে ইমেরিটাস শিক্ষক নির্বাচিত হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাকালে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মাসিক পরিক্রমা (১৯৬০-৬২), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পত্রিকা (১৯৭২), ত্রৈমাসিক সাহিত্যপত্র (১৯৮৪) ইত্যাদি সাহিত্যপত্রিকা সম্পাদনা করেন। বর্তমানে সম্পাদনা করছেন ত্রৈমাসিক নতুন দিগন্ত। আশিটিরও বেশি সৃষ্টিশীল ও মননশীল গ্রন্থের প্রণেতা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর প্রকাশিত গ্রন্থ তালিকায় আছে- ‘ছোটদের শেক্সপিয়ার’, ‘অন্বেষণ’, ‘বুনো হাঁস’, ‘কাব্যের স্বভাব’, ‘ইনট্রোডিউসিং নজরুল ইসলাম’, ‘দ্বিতীয় ভুবন’, ‘এরিস্টোটালের কাব্য’, ‘তাকিয়ে দেখা’, ‘নিরাশ্রয় গৃহী’, ‘আরণ্যক দৃশ্যাবলি’, ‘শরৎচন্দ্র ও সামন্তবাদ’, ‘বঙ্কিমচন্দ্রের জমিদার ও কৃষক’, ‘আমার পিতার মুখ’, ‘স্বাধীনতা ও সংস্কৃতি’, ‘দরজাটা খোলা’, ‘বাঙালি কাকে বলি’, ‘স্বাধীনতার স্পৃহা’, ‘বৃত্তের ভাঙাগড়া’, ‘ভালো মানুষের জগৎ’, ‘রাষ্ট্র ও কল্পলোক’, ‘দুই যাত্রায় এক যাত্রী’, ‘উদ্যান এবং উদ্যানের বাইরে’ ইত্যাদি।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সাহিত্যকর্মে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘বাংলা একাডেমি স্বর্ণপদক’, ‘বিচারপতি ইব্রাহিম পুরস্কার’, ‘অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার’, ‘বেগম জেবুন্নেসা ও কাজী মাহবুবুল্লাহ ফাউন্ডেশন পুরস্কার’সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছেন।