advertisement
advertisement
advertisement.

বিয়ানীবাজারে আশ্রয় কেন্দ্রে খাবার সংকট

সামিয়ান হাসান, বিয়ানীবাজার (সিলেট)
২৩ জুন ২০২২ ১২:০০ এএম | আপডেট: ২২ জুন ২০২২ ১১:৪৬ পিএম
advertisement..

বিয়ানীবাজার উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার প্রায় ৯০ ভাগ এলাকা ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত হয়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে।

advertisement

বিয়ানীবাজারে পানিবন্দি হয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে এখানকার ১৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় উপজেলার প্রায় সবকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান স্থগিত রাখা হয়েছে। ২৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে পানিবন্দি ১৪২ গ্রামের ৪০০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু সময় সময় পানি বাড়ার কারণে এসব আশ্রয়কেন্দ্র থেকে অনেক পরিবারকে গতকাল অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে আশ্রয়কেন্দ্র নিয়ে নতুন করে বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণকে। এদিকে আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার সংকট তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে বলে আশ্রিতরা অভিযোগ করেছেন। ত্রাণ বিতরণে ধীরগতিতে এখনো অনেক এলাকার মানুষ সহায়তা পাননি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বন্যানিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুর্গত এলাকায় সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন।

বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রোমান মিয়া বলেন, এখানকার ১৬০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১০২টিতে বন্যার পানি হানা দিয়েছে। আর ২৩টিতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌলুদুর রহমান জানান, উপজেলার ৬৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসা) মধ্যে ৩৬টিতে বন্যার পানি উঠেছে। অন্যগুলোর মধ্যে ৫টিতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

বন্যায় স্থানীয় মানুষের সঙ্গে গবাদি পশুপাখিও ক্ষতির শিকার হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই জানাতে পারছে না স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়।

খসির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া আমির উদ্দিন বলেন, গত ৫ দিন থেকে পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু পর্যাপ্ত খাবার না পাওয়ায় পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে রয়েছি। দুদিন আগে যে খাবার দেওয়া হয়েছে, তা আমাদের শেষ হয়ে গেছে।

আফিয়া বেগম নামের অপর একজন বলেন, খাবার না থাকায় ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে কষ্টে আছি। স্কুলে এসে আশ্রয় নিয়েছিলাম কিন্তু সেখানেও পানি ঢুকে পড়ছে। এর পর কি হবে আল্লাহ জানেন।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর জানান, বন্যা মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। দুর্গত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যাদের ঘরবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে তাদের নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা বিদ্যালয় ভবনে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।